কলকাতা শহরের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলিতে ফের শুরু হয়েছে ড্রাগ পাচারকারীদের আনাগোনা। তবে পুরোনো রাস্তায় নয়, পুলিশের নজর এড়াতে মাদকের কারবারিরা তৈরি করেছে নতুন রুট।
২০১৭ সালের শেষে শহরের একাধিক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজে মাদক পাচার চক্রের খোঁজ পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল একাধিক পড়ুয়া। ওই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন ক্যাম্পাসগুলিতে মাদক ব্যবসায় ভাটা পড়েছিল। কিন্তু পুলিশকর্তাদের একাংশের দাবি, এই বছরের শুরু থেকে ফের মাদকের কারবারিরা ক্যাম্পাসগুলিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
পুরোনো ধাঁচেই ড্রাগ পেডলার হিসাবে কাজে লাগানো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের একাংশকে। তবে বাইপাস সংলগ্ন পুরনো ঠেকগুলির পরিবর্তে পুলিশের নজর এড়াতে মাদকের কারবারিরা পাচারের সেফ করিডোর হিসাবে ব্যবহার করছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একাধিক রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকা। এর ফলে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল ও ম্যানেজমেন্ট কলেজের পরিবর্তে দক্ষিণ কলকাতার চার-পাঁচটি কলেজ ও একটি নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্রি বেড়েছে। তবে দক্ষিণের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজও এই তালিকায় রয়েছে।
লালবাজারের এক আধিকারিক বলেন, "২০১৭ সালের ঘটনার রেশ গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষও সক্রিয় ছিলেন। আমরাও নিয়মিত নজরদারি করেছি। তাই কলেজে মাদক ব্যবসায় ভাঁটা পড়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আমরা খবর পেয়েছি, ফের নতুন করে একাধিক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ নির্বাচনের পরেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মূলত, ঢাকুরিয়া, পার্ক সার্কাস, বাঘাযতীনের স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে মাদক পাচার হচ্ছে ক্যাম্পাসে।"
পুলিশের রাডারে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে? লালবাজার সূত্রের খবর, দেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর এলাকার একটি মেডিক্যাল কলেজ, গোলপার্ক এলাকার একটি কলেজ, হাজরা ও লেক মার্কেটের কয়েকটি কলেজ। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, জুনের শুরুতে এই নিয়ে বড় অভিযান হতে পারে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরেই মাদক বিরোধী আন্দোলন করছেন। তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার নেতা মনোজিৎ মণ্ডল বলেন, "আমরা নিয়মিত প্রচার, সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওয়ার্কশপ করছি। ক্যাম্পাসে মদ্যপান বা মাদকের ঘটনায় কোনও পড়ুয়া ধরা পড়লে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। কিন্তু ফল তেমন মিলছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই চক্রের সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।"