Advertisment

বিধিনিষেধে বিপাকে উত্তরের পর্যটন, পাহাড় ছাড়ছেন পর্যটকেরা

বিধিনিষেধের কোপে বাংলার পর্যটন। হতাশ পর্যটকরা, মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Due to covid rstrictions tourists left hill area of north bengal

পাহাড় ছাড়ছেন পর্যটকরা।ছবি: সন্দীপ সরকার

ছন্দ ফেরার আগেই ছন্দ পতন। করোনার চোখ রাঙানি পাহাড় ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পকে ফের পিছিয়ে দিল কয়েক যোজন দূরে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই পর্যটকেরা ভিড় জমিয়েছিল পাহাড় ডুয়ার্সে। আশার আলো দেখেছিল পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত মানুষ জন। নতুন করে করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ার দরুন রাজ্যে জারি হয়েছে করোনা সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধ। বিধি নিষেধের কোপে পড়েছে বাংলার পর্যটন। হতাশ পর্যটকরা, তেমনই মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও।

Advertisment

বাংলার দুয়ারে কড়া নাড়ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধির বাঁধনে বাধা পড়েছে রাজ্য। রবিবারই নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। বিধিনিষেধে বলা হয়েছে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে সমস্ত পর্যটনস্থল, জাতীয় উদ্যান, চিড়িয়াখানা, বিনোদন পার্ক। বিমান চলাচলও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে উত্তরের পর্যটন শিল্পে। আর এই নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে পর্যটনে। একই সঙ্গে বিভ্রান্ত পর্যটকেরাও।

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই এবছর পর্যটকের ঢল নেমেছে পাহাড় ডুয়ার্সে। করোনার কারণে টানা দেড় বছরের খরা কাটিয়ে দু'পয়সা লাভের মুখ দেখেছিলেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। বড়দিনের পরপরই দার্জিলিং এ বরফ পড়ায় পাহাড়ে বেড়ে গিয়েছিল পর্যটকের সংখ্যা। তারা ভেবেছিলেন যেভাবে বছরের শুরুতে পর্যটকের ঢল নেমেছে, তাতে এবার লাভের মুখ দেখবেন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

publive-image

পর্যটন সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট স্যান্যাল বলেন, ''করোনার কারণে গত বছর ব্যপক লোকসান হয়েছে পর্যটন শিল্পে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটকের ঢল নেমেছিল। কিন্তু ফের করোনা শুরু হওয়ায় ছন্দে ফেরার আগেই ছন্দ পতন ঘটল।'' এই পরিস্থিতির কীভাবে মোকাবিলা করবেন তা নিয়েই চিন্তিত তারা। তাছাড়া সরকারি নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সম্রাট বাবু আরও বলেন, ''পর্যটনস্থল বন্ধের কথা বলা হলেও পর্যটকদের যাতায়াতে কোন বিধি নিষেধের কথা বলা নেই। হোটেল, রিসোর্ট, হোম-স্টেতে পর্যটকরা থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।''

করোনার বিধিনিষেধ জারি হতেই পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। শুরু হয়েছে হোটেলে বুকিং বাতিল। সমস্যার মধ্যে পড়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। দার্জিলিং জেলার এক হোমস্টের কর্নধার প্রিয়দর্শিনী দাসগুপ্ত বলেন, ''২০২১-এর পর্যটন মরসুমে করোনার কারণে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে হোম স্টে-র ব্যবসায়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যবসা ভালই চলছিল। আবার করোনা গ্রাস করে নিল তাদের ব্যবসা। টানা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বুকিং ছিল। রবিবার রাত থেকেই বুকিং ক্যান্সেল হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বাতিল হয়ে গিয়েছে ৪০ শতাংস বুকিং। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাধ্য হবেন হোমস্টের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।''

আরও পড়ুন- নেতা থেকে আম আদমি, সর্বত্র বিধি ভাঙার ‘খেলা’, নির্দেশিকা যেন প্রহসন!

রবিবার বিকেলে রাজ্য সরকারের তরফে বিধিনিষেধ জারি হতেই সমস্যায় পড়েছে পাহাড় ডুয়ার্সে আসা পর্যটকেরা। পাহাড়ে বেড়াতে আসা উত্তর ২৪ পরগনার ভেবিয়ার বাসিন্দা মৌমিতা বসু মল্লিক জানান, করোনার ভীতি কাটিয়ে দার্জিলিঙে বেড়াতে এসেছিলেন সপরিবারে, কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নতুন বিধি নিষেধের কারণে পাহাড় ছেড়ে যেতে হচ্ছে। পাহাড় ঘুরতে এলাম, দেখা হল না টাইগার হিল, বাতাসিয়ালুপ, রক গার্ডেন হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক।

মনখারাপ তার দুই মেয়ে রাজন্যা ও অনন্যার। একই ভাবে মন খারাপ সোদপুরের বাসিন্দা রায়ান সরকারের। তিনি গিয়েছিলেন ডুয়ার্সে। গরুমারা, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানগুলি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে বন্যপ্রান দেখা থেকে বঞ্চিত হলেন। বাধ্য হয়েই ট্যুর বাতিল করে ফিরে যাচ্ছেন কলকাতায়।

দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পন্নমবলম বলেন, ''সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী দার্জিলিং ও পার্শ্ববর্তী সকল দ্রষ্টব্য স্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে হিমালয়ান জুলজিকাল পার্ক বাতাসিয়া লুপ রক গার্ডেন''।

darjeeling north bengal Tourist
Advertisment