জন্মের পরেই হার্টে ফুটো ধরা পড়ে একরত্তি শিশুর। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সদ্যোজাতের দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। সেই থেকে একটানা কলকাতার পিজি হাসপাতালে দৌড়োচ্ছেন বাবা-মা। প্রতিবারই বেড নেই বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিন যত এগোচ্ছে ছোট্ট শিশুটির শারীরিক পরিস্থিতির ততই অবনতি হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই গরিব পরিবারের। কিন্তু বারবার মুখ ফেরাচ্ছে সরকারি হাসপাতালও। কীভাবে ছেলের চিকিৎসা করাবেন তা ভেবেই কুল পাচ্ছেন না অসহায় বাবা-মা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাটরা গ্রামের আশিক মণ্ডল। জন্মের পরেই তার হার্টে ফুটো রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তারপর থেকে প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতাল হয়ে সদ্যোজাত শিশুটিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় বাড়ির লোকজন। সেখানে চিকিৎসক দেখে জানান, দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন আশিকের। কিন্তু তারপর থেকে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন বছর। এর মধ্যে প্রায় ৩০ বার হাসপাতালে গিয়েছেন আশিকের বাবা-মা।
কিন্তু প্রতিবারই হাসপাতালে বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। আশিকের বয়স তিন পেরিয়েছে। এখন মাঝে মধ্যেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসহায় বাবা মা বুঝতেই পারছেন না কীভাবে হবে ছেলের চিকিৎসা। আশিকের বাবা আমিনুর মণ্ডল দর্জির কাজ করেন। তিনি বলেন, "আমার সামান্য আয়। নার্সিংহোমে ছেলের চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তার উপর প্রতি মাসে কলকাতার হাসপাতালে যেতে খরচও হচ্ছে। তবু ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের উপর ভরসা করে থাকা ছাড়া উপায় নেই।"
আরও পড়ুন- স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে আদিবাসী মহিলার মৃত্যু, চরম আতঙ্ক বীরভূমের মল্লারপুরে
কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ভেবেই কুল পাচ্ছে না অসহায় পরিবার। তাঁর মা সালমা মণ্ডল বলেন, "ছেলের চিকিৎসার জন্য সাড়ে তিন বছর ধরে ঘুরছি। শুধু বলছে বেড খালি নেই। পরে এসো। দুই-তিন সপ্তাহ পর পর ডেট দিচ্ছে। বারবার আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। ভেবেই পাচ্ছি না কীভাবে হবে ছেলের চিকিৎসা।"