এবারে মহানগরে দুর্গা উৎসব চলেছে প্রায় অর্ধ মাস ধরে। যা পিতৃপক্ষে শুরু হয়েছিল, শেষ হল লক্ষ্মীপুজোর প্রাক্কালে রেড রোডে দুর্গা কার্নিভালের মাধ্য়মে। এই কার্নিভাল এবার বিশ্বের অন্য়ত্র অনেক দেশের দর্শক সরাসরি উপভোগ করেছেন। বহু বিদেশী অতিথি মঞ্চ আলোকিত করে চোখ রেখেছে কার্নিভালের শোভাযাত্রায়। মুখ্য়মন্ত্রী আয়োজিত দুর্গার শোভাযাত্রায় হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। কিন্তু এই কার্নিভালকে সরকারি পয়সায় তামাশা ছাড়া অন্য় কিছু বলতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য়, আদতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না, ধ্বংস হচ্ছে সরকারি কোষাগার।
রাজ্য় বিজেপি প্রথম থেকেই এই ধরনের উৎসবের বিরোধিতা করে আসছে। দলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “খেলা, মেলা, লীলার উৎসব নিয়ে সরকার মাতিয়ে রাখতে চায়। ৩৬৫ দিনই উৎসব থাকে। উৎসবের মাধ্য়মে মানুষের দুঃখ, দুর্দশা, যন্ত্রণা অত্য়াচার, ভুলে থাকবে সাধারণ মানুষ। এই ভাবে চিন্তাভাবনা করছে তৃণমূল সরকার।’’ তবে একইসঙ্গে তিনি মন্তব্য় করেন, “তাতে কিছু লাভ হবে না। কেন সরকারি অর্থ অপচয় করে এইসব হচ্ছে তাও সাধারণ মানুষ জানেন। তাঁরা ঠিক সময়ে জবাব দিয়ে দেবে।’’
রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই বক্তব্য় ছিল সোমেন মিত্রকে রাহুল গান্ধীরা দলের রাজ্য় সভাপতি করেছেন মমতা বিরোধিতার ঝাঁঝ কমাতে। লোকসভার ভোটের কথা মাথায় রেখে এই প্রবীণ নেতাকে ওই পদ দেওয়া হয়েছে। তবে আপাতত রাজ্য় কংগ্রেস যে মমতা সরকারের বিরোধিতার রাস্তায় হাটবে তা একেবারে স্পষ্ট। সোমেন মিত্র বলেন, “যে টাকাটা খরচ করছে, সেটা কার? টাকাটা রাজকোষের। টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। ট্রেজারির টাকা খরচ করে এইধরনের ফুর্তি করার অধিকার কোনও সরকারের আছে কি না, সেটাই আজ সব থেকে বড় প্রশ্ন। এই যে কোটি কোটি টাকা খরচ হল তার ফল কী?’’ তাঁর প্রশ্ন, “কারা এলেন বিদেশ থেকে’’ তাঁরা কি দিয়ে গেলেন আমাদের রাজ্য়কে’’ এসব নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবে। এটা তো তামাশা দেখার জায়গা হয়ে গিয়েছে। শিল্প আসার জায়গা নয়। মুখ্যমন্ত্রী ইতালি, জার্মানি গেলেন- কটা শিল্প এল, সে কথা মানুষ জানতে চায়।’’
সিপিএমও এই কার্নিভালের বিরোধিতা করছে। দলের সাংসদ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য়, “মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় মনে করেছেন বাঙালি হুজুগপ্রিয় জাতি। ব্রিজ ভাঙুক, কারখানা বন্ধ হোক, উৎসব হবে। তিনিই তো বলেছেন উৎসব করব না শ্রাদ্ধ করব! তবে হুজুগের কারবার শেষ।’’ সেলিমের প্রশ্ন, “এতে কি শিল্প বাড়ছে না বিনিয়োগ বাড়ছে? তিনি তো বিদেশে গেলেন, শিল্প এল কি?’’