পুজোর আগেই পুজোর মিছিল। দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করেছে ইউনেস্কো। সেই সাফল্য উদযাপনে লক্ষ্মীবারে কলকাতায় বিরাট শোভাযাত্রা হবে। আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মিছিলকে রঙিন করে তোলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কি ধরণের পোশাক পড়বে, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে কী রঙের ছাতা ব্যবহার করবে তারও গাইডলাইন বাতলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোভাযাত্রায় সকলকে যোগদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'কলকাতার সাতটা ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে মিছিল শুরু হবে। সকলকে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ব্যাক্তিগতভাবে সকলের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছানো সম্ভব নয়, তাই সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমেই সকলকে মিছিলে আসার আর্জি জানাচ্ছি।দুপুর ২টোর মধ্যে সকলে জোড়াসাঁকোয় চলে আসুন। দল, মত নির্বিশেষে সকলে আসুন।'
শোভাযাত্রা হবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে দুপুর ১টা থেকে হবে মিছিল। ১ সেপ্টেম্বর জোড়াসাঁকো থেকে মিছিল হবে রাণী রাসমণি রোড পর্যন্ত। সেখানে ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজনও থাকছে। তার জন্য প্রায় পনেরশ চেয়ারের আয়োজন থাকছে।
আরও পড়ুন- দুর্গার জন্য মিছিলে হাঁটবে বাংলা, অন্তরালেই হেরিটেজ সম্মানের নেপথ্য কারিগর
সাফল্যের উদযাপন। তাই পদযাত্রাটি স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার। পুজো উদ্যোক্তা ও ইচ্ছুকরা যাতে নির্ধারিত সময়ে জমায়েতে যেতে পারেন তাই বিশেষ কয়েকটা পদক্ষেপ করা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মীরা দুপুর ১টায় ছুটি পাবেন। স্কুল, কলেজগুলো সকাল ১০ বা ১১টার মধ্যে ছুটি হয়ে যাবে।
মিছিলকে পুরোপুরি কালারফুল করতে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কালারফুল জামাকাপড় পরে পুজো উদ্যোক্থারা মিছিল করবেন। কালো নয়, ছাতাও কালারফুল হতে হবে বলে আগেই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু তিলোত্তমা নয়, জেলাস্তরেও একই সময়ে এই মিছিল হবে। নবান্নের গাইডলাইন মোতাবেক পদযাত্রায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ থেকে ৭৫০ জন মহিলা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। তবে শুধু লক্ষ্মীর ভান্ডারের মহিলারাই নয়, জেলার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীরাও ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। পুজো কমিটির কাছেই তাদের ব্যানার-সহ পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পদযাত্রায় ওই জেলার সর্বাধিক ১০০ জন লোকপ্রশারশিল্পীকে নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা এই পদযাত্রায় জেলার স্কুলগুলি থেকে অংশগ্রহণ করতে পারেন তবে তারা তাদের বিদ্যালয় পোশাক পড়েই এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন।
সেজে উঠছে কলকাতা। জোড়াসাঁকো থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিশেষ ফ্লেক্স দিয়ে রাস্তার দু'ধার মুড়ে ফেলা হয়েছে। এই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইউনেস্কোকে। যার প্রাপ্তি স্বীকার করেছে ইউনেস্কো কর্তৃপক্ষ। ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় হাজির থাকবেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা। ইউনেস্কোর ভারত-ভূটান-মালদ্বীপ-শ্রীলঙ্কার ডিরেক্টর এরিক ফল্ট চিঠি দিয়ে তাঁদের উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে।