প্রকৃতিকে নিংড়ে নিয়ে তৈরি আকশ ছোঁয়া অট্টালিকায় ছেয়ে যাচ্ছে গোটা শহর। পরিবেশের থেকে কেবলই চলছে নেওয়ার পালা। দেওয়ার পালা কমছে ক্রমশ। দিন দিন বাড়তে থাকা দূষণ রোধ করতে এবার প্রশাসনিক উদ্যোগ নিল নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (এনকেডিএ)। নিউটাউন জুড়ে বর্ষার আগেই লাগানো হবে বাতাসের ধূলিকণা শুষে নিতে পারে এমন গাছ।
অরণ্য দফতরের পরামর্শে নিম, সজনে, বেল, শিরিষ, মহুয়া, পলাশ, বাবুল সহ ২১টি প্রজাতির সব মিলিয়ে ৩০০০ গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনকেডিএ। চলতি বছরে বর্ষা নামার আগেই রাস্তার দু'ধারে, পার্কে এবং নিউটাউনের সমস্ত রাস্তার মোড়ের আইল্যান্ডে লাগানো হবে দূষণ রোধকারী গাছ। কমপক্ষে ২ থেকে তিন রকম প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করতে হবে এক জায়গায়। আর প্রতি গাছ যেন মাটি থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত খাবার পায়, মূল মাটিতে কোকো পিট, ধানের শিষ এবং বালির উপস্থিতি থাকতে হবে ৪:১:১:১ এই অনুপাতে। ইতিমধ্যে নিউটাউনের ইকোপার্ক ছাড়াও একটি অঞ্চলে শুধু নিম গাছ লাগিয়ে 'নিম বনানী' তৈরি করেছে এএনকেডিএ।
আরও পড়ুন, স্বাধীনতা উদযাপিত হোক, কিন্তু দেশ ভাগের হাহাকার যেন না ভোলে এই শহর
বাতাসের ধূলিকণা শুষে নিতে পারে, এমন ২১টি প্রজাতির তালিকা দিয়েছে অরণ্য দফতর। (ছবি সূত্র শ্রী দেবাশিস সেন)
২১টি প্রজাতির মধ্যে প্রতিটি গাছই মূলত বাতাসের কার্বন-মনোোক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং দূষণ বাড়ায় এমন সমস্ত গ্যাস শুষে নিয়ে বাতাসকে পরিশুদ্ধ করে। এ ছাড়া বাতাসের দূষণ শোষণ করে, এমন যন্ত্র প্রস্তুতকারক এক জার্মান সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে প্রশাসনের, জানালেন এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান শ্রী দেবাশিস সেন। বললেন, কথাবার্তা চূড়ান্ত হলে চলতি বছরের পুজোর আগেই সেই মেশিন কিনে তার সাহায্যে দূষণের মাত্রা কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া একাধারে শহরের সৌন্দর্যায়ন বাড়াতে এবং কালো ধোঁয়ায় ঢাকতে থাকা শহরকে আরেকটু সবুজ করার লক্ষ্যে নিউটাউন অঞ্চলে ৩০টি ভার্টিকাল গার্ডেন গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
মেট্রোর লাইনের থামের ওপর তৈরি হয়েছে ভার্টিকাল গার্ডেন। (ছবি সূত্র-শ্রী দেবাশিস সেন)
গত একমাস ধরে 'ওয়েস্ট সেগ্রিগেশন'-এর জন্য নিউটাউনের প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রচার চালাচ্ছে এনকেডিএ। এই প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান শ্রী দেবাশিস সেন জানালেন, "টেকসই উন্নয়নের জন্য পৃথক ভাবে আবর্জনা সংগ্রহের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে এখন। এক্ষেত্রে অধিকাংশ আবর্জনা রিসাইকেল করতে সুবিধে হয়, যা অর্থনীতির পক্ষে খুব গুরুত্বপূর্ণ"।