East burdwan Murder: বাংলার বুকে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড ! দুই শিশু কন্যার সামনেই মাকে নৃশংস ভাবে খুন করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে দিল বাবা। তারপর সেই ঘরেই দুই কন্যাকে নিয়েই রাতের শান্তির ঘুম!
বধূ হত্যার এমন নৃশংস ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে জঙ্গলমহল হিসাবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের যদুগড়িয়া গ্রামে। এতবড় কাণ্ড ঘটিয়ে অবশ্য পার পায়নি অভিযুক্ত সোম হাঁসদা। আউশগ্রাম থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ। সোম হাঁসদার কঠিন সাজার দাবি করেছে নিহতের পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোম হাঁসদার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল লক্ষ্মীর। বছর সাতেক আগে তারা বিয়ে করেন। দুই কন্যা সন্তান সোনিয়া ও রাখীকে নিয়ে দম্পতি দিব্যি তাদের দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন। বর্তমানে ছয় বছর বয়সী সোনিয়া স্থানীয় একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণীর পড়ুয়া। অপর শিশুকন্যার বয়স মাত্র তিন বছর।
সোম হাঁসদার মা পানমনি হাঁসদা এদিন বলেন, "আমার ছেলে মদের নেশায় ভীষণ ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছিল । প্রতিদিন মদ খেত। কাজকর্ম সেরকমর করত না। নেশা করা নিয়ে বৌমা আপত্তি করলে ছেলের সঙ্গে তার প্রায়ই তার অশান্তি লেগেই থাকত। মঙ্গলবার সকাল থেকে বৌমাকে বাড়িতে আর দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না। বৌমা কোথায় তা আমি আমার ছেলের কাছে জানতে চাই । তখন ছেলে জানায়, তাঁর মার খেয়ে বৌমা পালিয়ে গেছো। এরপর সন্ধ্যায় দেখি বাড়িতে পুলিশ এসে ছেলের ঘরের মেঝের মাটি খুঁড়ছে। বেশ খানিকটা মাটি খোঁড়া হতেই বেরিয়ে আসে বৌমার মৃতদেহ। পুলিশ বৌমার মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি আমার ছেলেকেও ধরে আউশগ্রাম থানার নিয়ে যায়। বড় নাতনি সোনিয়া পুলিশের কাছে তাঁর বাবার সব কীর্তি ফাঁস করে দেয়"।
সোনিয়া পুলিশকে জানায় ,“ছোট বোন ও তাঁর সামনেই তাঁদের মাকে হত্যা করে বাবা। তারপর ঘরের মাটি খুড়ে মায়ের মৃতদেহ পুঁতে দিয়ে ওই ঘরে তাঁদেরকে নিয়ে শুয়ে পড়ে বাবা"। এই ঘটনা সোমবার রাতে ঘটেছে বলে পুলিশকে জানায় সোনিয়া।
অভিযুক্তের মা আরও বলেন ,"নাতনির কাছে জেনেছি ঘটনার দিন শাবল দিয়ে বৌমার মাথায় আঘাত করেছিল ছেলে। তাতেই বৌমার মৃত্যু হয়। এরপর ঘরের মেঝে খুঁড়ে বৌমার মৃতদেহ পুঁতে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। বাইরে থেকে কেউ যাতে কিছু বুঝতে না পারে তার জন্য ঘরে তালা দিয়ে রাখে ছেলে। কিন্তু এতসব কাণ্ড ঘটিয়েও ছেলে পুলিশের কাছে সত্য ধামাচাপা দিয়ে রাখতে পারে নি"।
জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, পারিবারিক বিবাদের জেরেই স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে । দুই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে শিশুকন্যাদের হোমে পাঠানো হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।