কেন্দ্রীয় সরকারের মাপকাঠির বিচারে পশ্চিমবঙ্গের সেরা গ্রামীণ হাসপাতাল হিসেবে বিবেচিত হল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল। এমনকী এই হাসপাতাল পরিবেশ-বান্ধব হাসপাতালের স্বীকৃতিও পেয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এই জেলারই বড়শুল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে জেলার ভাতার গ্রামীণ হাসপাতাল। কেন্দ্রের এই স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে জেলার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা গর্বিত।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “প্রথম তিনটি স্থানেই জায়গা করে নিয়েছে আমাদের জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। এ ছাড়াও ব্লক ও গ্রামীণ মিলিয়ে জেলার ২৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৭০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছে। কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালও ভালো নম্বর পেয়েছে।” সিএমওএইচ আরও জানান, পরিষেবার মান ও পরিবেশ বান্ধব, দু’টি বিভাগেই প্রথম হওয়ার জন্য মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল ২০ লক্ষ টাকা পুরস্কার পাবে। এছাড়াও বড়শুল পাবে ১০ লক্ষ টাকা এবং ৭০ শতাংশের বেশি নম্বর পাওয়া বাকি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি এক লক্ষ টাকা করে কেন্দ্রীয় সাহায্য পাবে।
সরকারি হাসপাতালগুলির মান খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ২০১৫ সাল থেকে ‘কায়াকল্প’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করে। যে কর্মসূচি এই পশ্চিমবাংলায় ‘সুশ্রী’ নামে পরিচিত। কেন্দ্রের ঠিক করে দেওয়া পরিষেবার মান, এলাকাভিত্তিক স্বাস্থ্য পরিষেবায় হাসপাতালের ভূমিকা-সহ আটটি মাপকাঠির উপর রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালগুলির ‘পরীক্ষা’ নিয়েছিল। তার ফল গত সপ্তাহে বের হলে দেখা যায় রাজ্যের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রথম তিনে রয়েছে। ২০১৭ সালে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল এই একই পরীক্ষায় প্রথম হয়ে জাতীয়স্তরে ‘পরীক্ষা’র সুযোগ পেয়েছিল। ২০১৯-এ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল জাতীয়স্তরেও এক নম্বর স্থানে উঠে এসেছিল।
আরও পড়ুন- বিরাট স্বস্তি অনুব্রতর! প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেলেন কেষ্ট মণ্ডল
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ব্লক-গ্রামীণ ও মহকুমা হাসপাতালকে একটি বিভাগে রেখে পরীক্ষা নিয়ে থাকে। সবচেয়ে প্রথমে থাকে জেলা হাসপাতাল। পূর্ব বর্ধমানে জেলা হাসপাতাল নেই। তাই ২১টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতাল ও দু’টি মহকুমা হাসপাতাল ‘পরীক্ষা’য় বসার জন্যে ‘নিজস্ব মূল্যায়ন’ জেলাস্তরে জমা দেয়। তাতে একটি ব্লক হাসপাতাল ছাড়া বাকি হাসপাতাল গুলি ৭০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে রাজ্যের ‘পরীক্ষা’য় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল ‘কায়াকল্প’তে ৯৮.২৯% নম্বর পেয়ে প্রথম হয়। বড়শুল ৯৮% ও ভাতার ৯৭.৬২% নম্বর পেয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘কেউ সারাজীবন জেলে থাকে না, দিদি পাশে আছে এটাই এনাফ’, ফুল কনফিডেন্ট কেষ্ট
পরিবেশ-বান্ধব হাসপাতাল বিভাগে মেমারি ১০ এর মধ্যে ১০ পেয়ে প্রথম হয়েছে। পিএইচসি-র মধ্যে রায়না ২ ব্লকের বিনোদপুর প্রথম হয়ে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়েছে। মেমারি ১ ব্লকের বিএমওএইচ চিকিৎসক হর্ষ ঘোষ এদিন বলেন, ”এই পুরস্কার খুবই গর্বের। সবার সহযোগিতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। আরও ভালোভাবে পরিষেবা দিতে চাই।” একইভাবে পরপর দু’বার পুরস্কার প্রাপ্তিতে গর্বিত বর্ধমান ২ ব্লকের বিএমওএইচ অভিষেক যশ। খুশি ভাতারের ব্লকের বিএমওএইচ সঙ্ঘমিত্রা ভৌমিক।