weekend getaways: সুযোগ পেলেই বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন না এমন বাঙালির দেখা পাওয়াই ভার। অনেকে লম্বা ছুটি নিয়ে ঘুরতে যান দূর-দূরান্তে। কারও আবার ইচ্ছে থাকলেও উপায় কই? পকেট পারমিটের ব্যাপার যেমন আছে তেমনই ছুটি ম্যানেজটাও দারুণ দুরূহ একটি ব্যাপার। তবে এবার আর সে চিন্তা নেই। মাত্র দিন দুয়েকের ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই সব মুশকিল আসান। দিন দু'য়েক হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন বাগুড়ান জলপাই সমুদ্রতট থেকে। নিরিবিলি-কোলাহলমুক্ত এই সমুদ্রতটে পছন্দের মানুষগুলিকে নিয়ে কাটিয়ে আসুন দারুণ কিছু মুহূর্ত।
দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর যেন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। এবার দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন বাগুড়ান জলপাই সমুদ্রতট থেকে। দিন দুয়েকের এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অনেকদিন পর্যন্ত আপনার মণিকোঠায় বেঁধে থাকবে। পূর্ব মেদিনীপুরের এই সমুদ্র সৈকতটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দিঘা-মন্দারমণি এড়িয়ে হালপিলে অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছেন অসাধারণ এপ্রান্তে।
কী দেখবেন বাগুড়ান-জলপাইয়ে?
এখানকার নিরিবিলি ও শান্ত সমুদ্র সৈকতে লাল কাঁকড়ার দেখা মিলবে। কোলাহলহীন সমুদ্রতট জুড়ে লাল কাঁকড়ার দলকে খেলায় মাততে দেখে মন ভরে যাবে। এরই সঙ্গে বাড়তি পাওনা সমুদ্রতটের মনভোলানো রূপ। সাগর পাড়ে সারি দিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ঝাউবনের সারি। ইচ্ছে হলে কয়েক দণ্ড সেখানেও প্রাণ জোড়াতে পারেন।
এই সমুদ্র সৈকতটির বিশেষ একটি আকর্ষণ রয়েছে। এখানে জোয়ারের সময় যেমন তড়তড়িয়ে জল এগিয়ে আসে ঠিক তেমনই ভাঁটার সময় জল অনেকটাই যায় নেমে। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে থেকেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ কিন্তু হারাবেন না। গোধূলি বেলায় পশ্চিম প্রান্তে সূর্য ঢলার অপরূপ ছবি চাইলে ক্যামেরাবন্দি করতেই পারেন। এই সমুদ্রতটের মায়াবাী রূপ চোখে পড়ে বেলা পড়লেই। গোধূলি লগ্নে সি বিচের নজরকাড়া শোভা আপনাকে অদ্ভুত একটি রিল্যাক্স ফিল এনে দেবে।
বাগুড়ান জলপাই সমুদ্র সৈকতটি কিন্তু খুব বিস্তৃত নয়। এটা একটা বড় খাঁড়ির মতো। সেই খাঁড়িই ঢুকে গিয়েছে গভীর সমুদ্রে। সমুদ্রতটে দাঁড়িয়েই দেখতে পাবেন ডিঙি নৌকার সারি, এছাড়াও দেখা মিলবে মাছ ধরার ট্রলারের। দিঘা, মন্দারমণি এখন বড্ড বেশি কোলাহলপূর্ণ। তাই মুড রিফ্রেশ করতে অনেকেই নিরিবিলিতে বেড়াতে পছন্দ করেন। তাঁদের জন্য এই সমুদ্র সৈকত একেবারে পারফেক্ট।
কীভাবে যাবেন বাগুড়ান জলপাই সমুদ্রতটে?
কলকাতার দিক থেকে গেলে ট্রেন অথবা বাস কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে পৌঁছে যান কাঁথি। কাঁথি রেলস্টেশন থেকেও সোজা বাগুড়ান জলপাই যাওয়ার গাড়ি পাবেন। এছাড়াও কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে ছোট-বড় গাড়ি, অটোয় পৌঁছে যেতে পারবেন বাগুড়ান-জলপাইয়ে। সময় মেরেকেটে লাগবে আধঘণ্টার মতো।
বাগুড়ান-জলপাইয়ে থাকার জায়গার বন্দোবস্ত কী?
দিঘা, মন্দারমণির মতো অত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র নয় বলেই এখানে খুব বেশি হোটেল নেই। তিন-চারটি হোটেল আছে। সেই হোটেলগুলিতে এসি-নন এসি সবরকমের ঘরই পাবেন। হোটেল ভাড়াও নাগালের মধ্যেই। এখানকার রিসর্টে থাকার বাড়তি পাওনা হতে পারে ক্যাম্প ফায়ার। সন্ধেয় রিসর্টের বাগানে ভোজের এলাহি বন্দোবস্ত। এছাড়াও বেশ কয়েকটি হোটেলের সঙ্গেই থাকে টেন্ট। সেখানেও থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে আগে থেকে হোটেল বুক করে আসতে পারেন। পর্যটনের ভরা মরশুমে হোটেল বুক না করে এলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। বাগুড়ান জলপাইয়ের খুব কাছে জুনপুট নামে আরও একটি সমুদ্রতট রয়েছে। সেখানে অবশ্য আরও কতগুলি হোটেল পাবেন।