Success Story: সৃজনশীল কাজের প্রতি ছোট থেকেই তাঁর অদম্য ঝোঁক। তুলি আর রঙে নতুন কিছু সৃষ্টি করাই তাঁর নেশা। কোথাও অঙ্কন প্রতিযোগিতা বা প্রতিমা তৈরি দেখলেই দাঁড়িয়ে পড়তেন তিনি।
লিলুয়া ওয়ার্কশপে অফিস সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত শঙ্কর তালুকদার। শৈশব থেকেই মন দিয়ে ছবি এঁকে চলেছেন। স্লেট-পেন্সিলেই হোক বা পরবর্তীকালে ক্যানভাসে জল রং বা তেল রঙে তুলির টানেই হোক, তাঁর অঙ্কিত সমস্ত প্রতিকৃতিই যেন কথা বলে। একেবারে জীবন্ত ও বাস্তবধর্মী। BSC পাশ করার পরে ছবি আঁকার প্রতি এই অদম্য উৎসাহ তাঁকে নিয়ে যায় আর্ট কলেজের দোরগোড়ায়। তারপর ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ থেকে ভিজ্যুয়াল আর্টে প্রথম শ্রেণি-সহ ৫ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে চাকরির চেষ্টা।
চাকরি জীবনে শিক্ষক হিসেবে প্রথম পোস্টিং পেয়েছিলেন আজিমগঞ্জের রেলওয়ে এটিপি স্কুলে, ১৯৯৬ সালে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিনি আকর্ষিত হন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ঐতিহাসিক ভবনগুলির প্রতি। ছুটির দিনগুলিতে এখানকার ঐতিহাসিক ভবনগুলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং পুরনো স্থাপত্যে নির্মিত ভবনগুলির উপর প্রচুর ছবি এঁকেছেন। আঁকার নেশা তাঁর কখনও পিছু ছাড়েনি।
সংবর্ধনা জানানো হচ্ছে শঙ্কর তালুকদারকে।
কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে শঙ্করবাবুর এই নিয়ে প্রদর্শনী ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে। এর সঙ্গে রয়েছে আরও অনেক বিক্ষিপ্ত অথচ জীবনধর্মী শিল্প নিদর্শন যেমন, আজিমগঞ্জের ডন বস্কো (Don Bosco) গির্জায় সাঁওতালদের হারিয়ে যাওয়া জীবনযাত্রা নিয়ে ছবি। সেখানে ৩টি ১০ ফুট x ৩ ফুট মাপের ছবি ওঁর শিল্পকলার এক জীবন্ত নিদর্শন।
আরও পড়ুন- ব্যাগ-চটি হাতে সেন্টারে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা, মন্ত্রীর দশা আরও সঙ্গীন! কারণ জানেন?
এরপর ২০০২ সালে তিনি লিলুয়ায় পূর্ব রেলওয়ের হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতে চলে আসেন। এই সময় তাঁর জলরঙে আঁকা ছবি বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপ্তিলাভ করে। শিল্পী-জীবনে এপর্যন্ত শঙ্করবাবু দেশি-বিদেশি বহু প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন এবং অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৯৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ যুব উৎসবে "বঙ্গ চ্যাম্পিয়ন" হিসেবে খ্যাতি, ২০০৫ সালে হাওড়া স্টেশনের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রাপ্ত সম্মান, বহির্বঙ্গেও নানা সম্মান অর্জন করেছেন।
সম্প্রতি শঙ্কর তালুকদারের (Shankar Talukdar) ছবি নেদারল্যান্ডসে প্রদর্শনী হয়েছে। সেখানে আর্ট ওয়ার্কসের আমন্ত্রণ ছিল তাঁর। এই রেল কর্মীর আঁকা ছবিগুলি নেদারল্যান্ডে ভূয়সী প্রশংসিত হয়। দক্ষতার সঙ্গে চাকরি ও সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য তাঁকে উৎসাহিত করে চলেছেন পূর্ব রেলের (Eastern Railway) অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার সুমিত সরকার।
আরও পড়ুন- Premium: ভগৎ সিংকে নিয়ে ১৮ দিন লুকিয়েছিলেন এখানেই, সোনালী স্মৃতি আঁকড়ে বটুকেশ্বর দত্তের গ্রাম