সোমবার বিকেলেই ফিট সার্টিফিকেট দিয়েছিল বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারপরই তৎপর হন ইডির আধিকারিকরা। রাত প্রায় পৌনে ১০টা নাগাদ রেশন দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হাসপাতাল থেকে বের করে আনেন ইডির তদন্তকারীরা। নিয়ে যাওয়া হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। এবার মঙ্গলবার সকাল থেকে জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করছেন ইডি আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, সোমবার রাতে আর জেরা করা হয়নি মন্ত্রীকে। পাশাপাশি, জ্যোতিপ্রিয়কে ইডি দফতরের সেলে রাখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে ২ জন কেন্দ্রীয় জওয়ান এবং একজন রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল রয়েছেন।
জ্যোতিপ্রিয়র পরিবারের থেকে পোশাক ও পাখা দেওয়া হয়েছে। পরিবার থেকে দেওয়া হয়েছে বাড়ির খাবার, ইডি সূত্রে খবর। গতকাল হাসপাতাল থেকে হেঁটেই বেরোন বনমন্ত্রী। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বনমন্ত্রীকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় ইডি। রাতের খাবার নিয়ে হাসপাতালে আসেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিক।
এর আগে রবিবার থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলতে শুরু করে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। সোমবার একথা জানিয়েও দেয় বাইপাস সংলগ্ন হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড। এরপরই হাসপাতালে বালুর নজরদারিতে থাকা ইডি অফিসারদের তৎপর হয়ে উঠতে দেখা যায়।
রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গত শুক্রবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজত হয়েছে তাঁর। ওই দিনই শুনানির সময় অজ্ঞান হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রী। এজলাসেই চেয়ার থেকে পড়ে যান। বমি করেন। অজ্ঞানও হয়ে যান। তারপরই আদালতের অনুমতিতে তাঁকে বাইপাস সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চলে নানা শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
আরও পড়ুন ফিট জ্যোতিপ্রিয়, হেঁটেই উঠলেন গাড়িতে, নিয়ে যাওয়া হল সিজিওতে, রাতেই জেরা?
এরপরই সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ বৈঠকে বসে মেডিক্যাল বোর্ড। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, আপাতত জ্যোতিপ্রিয়র শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। অর্থাৎ, সর্বসম্মতিক্রমে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ছুটি দেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। অবশ্য ইডি হেফাজতে সময় মত মন্ত্রীকে ওষুধ, দিনে চারবার করে ইনসুলিন নিতে হবে। মাসখানেক পর মন্ত্রীকে ফলোআপ করতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে থাকায় এতদিন রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করতে পারেনি ইডি। হেফাজতে পেয়ে সেই কাজই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।