অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডির তলব। চলতি মাসের ১৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার তাঁকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই তলব করা হয়েছে। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, 'ইন্ডিয়া (জোট)-এর সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ই সেপ্টেম্বর দিল্লিতে, যেখানে আমি একজন সদস্য। কিন্তু, ইডি ঠিক একই দিনে তাঁদের সামনে হাজির হওয়ার জন্য আমাকে এখনই একটি নোটিশ দিয়েছেন! ৫৬-ইঞ্চি বুকের ভীরুতা এবং শূন্যতা দেখে অবাক না-হয়ে পারছি না।'
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভের কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যে 'ইন্ডিয়া' ছাতার তলায় এসেছে, সেই জোটের তিনিও অন্যতম সমন্বয়কারী। দিল্লিতে সেই সমন্বয় কমিটিরই ১৩ সেপ্টেম্বর বৈঠক রয়েছে। ইতিমধ্যে বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের তিনটি বৈঠক হয়েছে। সেগুলো সফলও হয়েছে। তার মধ্যে তৃতীয় বৈঠক শেষে তিনটি পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে জোট। সমন্বয় কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা সেই বৈঠকেই প্রকাশ করা হয়েছে। মুম্বইয়ের সেই তৃতীয় বৈঠকের পরে এবার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক বসছে দিল্লিতে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অবশ্য অতীতেও সমন পাঠিয়েছিল। সেই সমন অনুযায়ী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজিরাও দিয়েছিলেন। এবার ফের সমন পাঠানোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'আগামী বছর, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেখানে মানুষের আর্শীবাদে ইন্ডিয়া জোটের কাছে বিজেপির পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু, তার আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো বিজেপির হাতে ব্যবহৃত হতে হতে, নিজেদেরই মান-সম্মান খোয়াচ্ছে। আগামিদিনে তারা আর হৃত গৌরব ফিরে পাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাপ-কা-ব্যাটা, ভয় পান না। ভারতের অন্যান্য নেতা-নেত্রীরা যা বলার ক্ষমতা রাখেন না, যেটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনায়াসে বলে দিতে পারেন। তিনি বলেছেন, যদি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণ করা যায়, তিনি নিজে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে যাবেন।'
আরও পড়ুন- আদৌ মিলবে টাকা ফেরত? ময়দানে চিটফান্ড প্রতারিতরা, কলকাতা কাঁপাতে ‘বিরাট প্ল্যান’!
এর আগে, আদালত ইডি এবং সিবিআইকে প্রশ্ন করেছিল, অভিষেককে কেন সমন পাঠানো হচ্ছে না? শুধু তাই নয়, দুর্নীতি মামলায় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। এই ব্যাপারে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেছেন, 'ইডির রিপোর্ট দেখে জানতে পেরেছি যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন সাংসদ। তিনি এখনও লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সিইও পদে আছেন।' কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিচারপতি সিনহা এ-ও প্রশ্ন করেছেন, 'একই তথ্যে ভরা রিপোর্ট বার বার কেন দিচ্ছেন?' শুধু তাই নয়, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার)-এর মধ্যে ইডি-সিবিআইকে আদালতে রিপোর্ট পেশেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।