Advertisment

Premium: ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, একচিলতে ক্যাফেতেই লড়াই জারি স্বর্ণপদক জয়ী যুবকের

ক্যাফেতেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন এম ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট এক যুবক।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
MA pass gaighata gold medalist youth opened a cafe

রাজু মণ্ডল

অধ্যাপক হতে চেয়েছিলেন। সংসার বাঁচাতে আজ ভরসা এক চিলতে 'ক্যাফে'। তবে মেট্রো শহরের ঝাঁ চকচকে ক্যাফে বলতে আমরা যা বুঝি এই ক্যাফে একেবারেই তেমন নয়। বাঁশের তৈরি টিনের চালার এক চিলতে এই ক্যাফেতেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন এম ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট এক যুবক। রাজ্যে এমনিতেই প্রাথমিক-পুর নিয়োগে দুর্নীতি শিক্ষা-চাকরির বে আব্রু পর্দা আগেই ফাঁস করেছে। তবে রাজু মণ্ডলের লড়াইটা আপনার চোখে জল আনতে বাধ্য।

Advertisment

ছোট থেকে পড়াশুনার প্রতি তাঁর অগাধ ভালবাসা। স্কুল পেরিয়ে কলেজেও স্রেফ ভাল ছাত্র হিসাবে তাঁকে সকলেই এক নামে চিনত। গ্রাজুয়েশনের পরে এম.এ তে ভর্তি হয়েও তুখোড় রেজাল্টে সকলকে চমকে দেয় সে। কল্যাণী বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি তে ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট হয়ে মেলে গোল্ড মেডেলেও। এরপরই লড়াই শুরু চাকরির। একের পর এক পরীক্ষা পাশ করেও মেলেনি চাকরি। এর মধ্যেই বয়সও বেড়ে যাচ্ছে নেট-নেট পাস রাজুর।

বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মা ও সংসারের চাপ সামলাতে হাফিয়ে উঠেছেন। এভাবে আর কতদিন? কিছু তো একটা করতেই হবে। এই তাগিদেই শুরু একের পর এক বই লেখা। ইতিমধ্যেই রাজুর লেখা চারটি বই স্নাতকস্তরের অনেক পড়ুয়াই কিনে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ওই সামান্য টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে রাজুকে। বাড়তি কিছু উপার্জনের আশাতেই ক্যাফে খোলা। নামের মধ্যেও রয়েছে জমানো একরাশ অভিমান। 'শিক্ষিত বেকার ক্যাফে’ আবারও একবার যেন সমাজে বেকারত্বের বাস্তব চিত্রটা যেন আরও একবার প্রকাশ্যে এনে দিল রাজুর এই ক্যাফে।

গাইঘাটার চাঁদপাড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এই ক্যাফেকে ঘিরেই এখন জোর চর্চা। নিজের জীবনের কঠিন সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে রাজু জানিয়েছেন, "২০১৮ সালে স্নাতক পাশ করার পর কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ তে ভর্তি হই। তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল অধ্যাপক হওয়ার। ছোট থেকে অভাব-অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা। বাবা সামান্য রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ইদানিং কোমরের সমস্যার কারণে কাজ করাও ওনার পক্ষে ক্ষতি। এম.এ তে ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট হয়ে গোল্ড মেডেলও পাই। এরপর টেট-নেট পাশ করি। পিএইচডি’র জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। এরমাঝেই বেশ কিছু বই লিখেছি। সেগুলি স্নাতকস্তরের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা পড়ছেন। পাশাপাশি টিউশনও করি। কিন্তু সংসার চালাতে খুলতে হয় একটা ক্যাফে। এই ক্যাফের মধ্য দিয়ে সমাজকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম তাই ক্যাফের নাম রাখি 'শিক্ষিত বেকার ক্যাফে’ । চাকরি না পাওয়ার বেদনা প্রতিনিয়ত আমাকে কুড়ে কুড়ে খায়। তবে আমি কোন সহানুভূতি চাইনা। আমি চাই শুধু নিজের যোগ্যতায় একটা চাকরি"।

kolkata news job
Advertisment