নদিয়ার বগুলায় গিয়ে যাদবপুর কাণ্ডে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্বয়ং। ছেলের মৃত্যুর বিচার পরিবারটি পাবেন বলেই আশ্বাস দিয়েছেব শিক্ষামন্ত্রী।
ব্রাত্য বসু বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন। ছেলের মৃত্যুর বিচার পাবেনই।' গত বৃহস্পতিবার রাতে মৃত ছাত্রের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। দোষীদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর থেকে তদন্তে নেমে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। লালবাজারের আতসকাচে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস ও রেজিস্ট্রার। এ দিনই রজত রায় ও স্নেহমঞ্জু বসুকে লালবাজারে তলব কার হয়েছে। জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।
এই ঘটনার জন্য ইতিমধ্যেই মার্কসবাদীদের দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুরকে 'মৃত্যুপুর' বলে দেগে দিয়েছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে বগুলায় মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে যান রাজ্য সরকারের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী (শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা), এক তৃণমূল সাংসদ (বারাসতের সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার) এবং তৃণমূলের যুব শাখার সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।
পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে যে, গত বুধবার ঘটনার আগে বাংলা বিভাগের নবাগত ছাত্রটিকে চা খাইয়ে সিনিয়রদের ঘরে নিয়ে যান ধৃত সৌরভ চৌধুরী৷ সেখানেই উপস্থিত ছিলেন এই ধৃত মহম্মদ আরিফ সহ অন্যান্যরা৷ ওই ঘরেই প্রায় ঘন্টা ৩-য়েক ছিলেন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া৷ তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই তিন ঘণ্টা ছাত্রটির উপরে মানসিক অত্যাচার চলে। যার জেরে ছাত্রটি ঘর থেকে পড়িমড়ি করে বেরিয়ে যায় এবং কোনও ভাবে উপরের তলা থেকে পড়ে যায়৷ আর তাতেই প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে রক্তপাত হতে থাকে তাঁর। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, ধৃত কাশ্মীরি পড়ুয়া মহম্মদ আরিফ দাবি করেছিলেন যে, ঘটনার দিন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর হাত ছাড়িয়েই সে ঝাঁপ মারে হস্টেল থেকে। সেই সময় ছাত্রটি রীতিমতো ঘামে ভিজে ছিল৷ তার ফলে আরিফের হাত পিছলে গিয়েছিল। কিন্তু, ঘর্মাক্ত ছিল ওই ছাত্র? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
জেরায় এও পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ঘটনার পর অভিযুক্তেরা হস্টেলের রক্ষীকে মূল দরজা বন্ধ রেখে, ছোট দরজা খুলে দিতে বলে৷ তারপরে একটি অটো ও একটি ট্যাক্সি ডাকা হয়৷ ট্যাক্সিটি আগে পৌঁছায়। সেই ট্যাক্সি করেই রক্তাক্ত নবাগত ছাত্রটিকে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মহম্মদ আরিফ, সৌরভ-রা।