বেতন বৃদ্ধির দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন বুধবার ১২ দিনে পড়ল। সল্টলেকে বিকাশ ভবনের সামনে এই অনশন আন্দোলনে শামিল হয়েছেন কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। এদিকে বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে জরুরি সভা ডেকেছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সেখানে বক্তব্য রাখবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই মঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বেশ কিছু নতুন ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করছে শিক্ষামহল।
প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাজ্য সরকার ও পে-কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত ওই শিক্ষক সংগঠন। সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবারের নজরুল মঞ্চের সভা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, "আমরা রাজ্য সরকারের কাছে বেতন বৃদ্ধির আবেদন করেছি। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চমাধ্য়মিক শিক্ষকদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনে অনেকটাই ফারাক আছে। আমরা চাই, প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্যতা ও কাঠামো অনুযায়ী সর্বোচ্চ বেতন দেওয়া হোক। আমাদের আশা, সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকলেও আমাদের আবেদনে সাড়া দেওয়া হবে।"
তৃণমূল সমর্থিত এই শিক্ষক সংগঠন মনে করে, উচ্চমাধ্য়মিকের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের ফারাকের জন্য় দায়ী সিপিএম। তাদের ব্যাখ্যা, সিপিএম কেন্দ্রের নিয়ম না মেনে মাধ্যমিক পাশ, তারও আগে অষ্টমশ্রেণি পাশদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেছিল। কেন্দ্র একাধিকবার নির্দশে দিয়েছিল, উচ্চমাধ্য়মিকে পঞ্চাশ শতাংশ এবং দু'বছরের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। কিন্তু তারা নিজদের ক্যাডার ঢোকানোর জন্য সেই সব নিয়ম মানেনি। তাই বেতনের ক্ষেত্রে একটা ফারাক রয়ে গিয়েছে। অশোক রুদ্রের দাবি, "এই সরকার আসার পর ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন যে শিক্ষাগত কাঠামো নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তা মানা হয়েছে। শিক্ষকদের উচ্চমাধ্য়মিকে পঞ্চাশ শতাংশ নম্বর এবং বিনাখরচে ২ বছরের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। কেয়কশো কোটি টাকা খরচ করে প্রায় ৭৬ হাজার জনকে এই প্রশিক্ষণ করিয়েছে।"
জানা যাচ্ছে, সল্টলেকের আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকরাও নজরুল মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রীর সভার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। আন্দোলনকারী শান্তনু মন্ডল বলেন, "আমরা শুনেছি, কাল শিক্ষামন্ত্রীর সভা রয়েছে। সেখানে তিনি তেমন কিছু ঘোষণা করলে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আন্দোলন চলবে না তুলে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে।" এবিটিএ-র সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, "মাধ্যমিক পাশ নয় এমন শিক্ষক এ রাজ্যে কেন সারা ভারতে একজনও দেখাতে পারবেন না। এখন সারা ভারত ভিত্তিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভারতের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো বেতন কাঠামো কেন পাবে না প্রাথমিক শিক্ষকরা।"