৬ বছর বয়সে ৬ টি স্বর্ণপদক পেয়ে থেমে থাকেনি। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একের পর এক বাজিমাৎ করে চলেছে বছর আটেকের আরুষি। অনলাইনে মাত্র ৬ মিনিটে ২৫৪ টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নিজের নাম তোলে ছোট আরুষি। এরপর একে একে ছোট্ট মেয়ের নজরকাড়া সাফল্য অবাক করেছে সকলকেই। রহড়ার একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া আরুষি। মাত্র আট বছর বয়সেই ঝুলিতে একের পর এক পদক।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই গান ও আবৃত্তিতে ৮০টির বেশি পদক জয় করে সকলকে অবাক করে দেয় ছোট্ট আরুষি। এরপর ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী হিসাবে নিজের নাম তোলে সে। গত বছর ইন্টারন্যাশানাল অলিম্পিয়াডে ৭টি বিষয়ে অংশ নিয়ে ৬টি বিষয়ে গোল্ড মেডেল এবং একটিতে সিলভার জিতে খড়দহের মুখ উজ্জ্বল করেছে আরুষি। ১২টি দেশে অংশগ্রহণকারী লক্ষাধিক পড়ুয়ার মাঝে মেয়ের এই সাফল্যে খুশির হাওয়া পরিবারে। আর এবার সব রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে সে। চলতি বছর ইন্টারন্যাশানাল অলিম্পিয়াডে ১২টি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ জিতে আরুষি আবার ১৪টি দেশের মধ্যে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে প্রথম স্থান অর্জন করল।
নার্সারিতে পড়ার সময় থেকেই গান ও আবৃত্তির প্রতি আরুষির ঝোঁক। তারপর থেকেই শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় আরুষির একের পর এক আবৃত্তি আপলোডের পালা। যারমধ্যে কোনটির ভিউয়ার দেড়লক্ষ বা কোনটির ২ লক্ষ। সম্প্রতি আরুষির একটি আবৃত্তিতে ১০ লক্ষ ভিউ হয়েছে। মাত্র আড়াই বছর থেকে আবৃত্তিতে হাতেখড়ি। তখন থেকেই ওর স্টেজ পারফরমেন্স শুরু বলেই জানিয়েছেন বাবা দেবজ্যোতি দে। সেই সঙ্গে বাবা জানিয়েছেন, ‘শুধু আবৃত্তি নয় সেই সঙ্গে পড়াশুনাতে ও দারুণ। সব সময় নতুন কিছু করার, ইচ্ছা শেখার ইচ্ছা তাড়া করে বেড়ায় ছোট্ট মেয়েটিকে’।
আরুষির এই অসামান্য দক্ষতা থেকে এই মুহূর্তে কোন অর্থ উপার্জন করতে চান না বাবা। তিনি বলেন, ‘ও যেটা ভালবেসে করছে সেটা নিয়েই ও এগোক এটাই আমি চাই’। সেই সঙ্গে তিনি সমাজের সকল বাবা-মাকে দিয়েছেন এক বিশেষ বার্তা, দেবজ্যোতির কথায়, ‘পড়াশুনার চাপকে সামাল দিয়ে আপনার সন্তান যে বিষয়ে আগ্রহী সেদিকে ফোকাস দেওয়া সকল বাবা-মার একমাত্র কর্তব্য’। নিজের সাফল্যের প্রশ্নে লাজুক কণ্ঠে ছোট্ট আরুষি জানিয়েছে, ‘আরও ভাল করতে হবে ভবিষ্যতে’। বড় হয়ে মহাকাশবিজ্ঞানী হতে চায় সে। মেয়ের সাফল্যে মা মা প্রীতি সাহা চৌধুরী বলেছেন, ‘আবৃত্তিটা ওর ভাললাগার একটা বিষয়। সেই সঙ্গে ও আবৃত্তিতে খুবই সাবলীল। আমরা চাই ও ওর নিজের ছন্দে বেড়ে উঠুক। পড়াশুনার পাশাপাশি গানও আরুষির পছন্দের বিষয়। মেয়ের সাফল্যে আমরা গর্বিত’।