এক পয়সা ঋণ না নিয়েও জুটছে কোটি টাকার ঋণ খেলাপির তকমা। বেসরকারি ফাইন্যান্স কোম্পানির হঠকারী সিদ্ধান্তে মাথায় হাত পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার ব্যবসায়ী একরাম শেখের। সদুত্তোর মিলছে না ওই বেসরকারি ফাইন্যান্স কোম্পানি কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক আধিকারিকদের থেকেও। সুবিচার পেতে ব্যবসায়ী আদালতের দ্বারস্থ হলেও লাভ হয়নি। কাগজে-কলমে বহু টাকা ঋণ দেখানোয় ব্যবসায়ী ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ পাচ্ছেন না। বর্তমানে রীতিমত দিশেহারা একরাম।
ব্যবসায়ী একরাম শেখের অভিযোগ, ২০১৯ সালে বর্ধমানের একটি ফাইন্যান্স কোম্পানিতে গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিতে যান তিনি। তখনই নিজে সিভিল স্কোর দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁর। তিনি দেখেন তাঁর নামে ১৯ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৭৯ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে। এই ঋণ দিয়েছে শ্রীরাম ট্রান্সপোর্ট ফাইনান্স লিমিটেড। এটা নাকি পুরোটাই তাঁর অজান্তেই। এত টাকা ঋণ তিনি কখনোই নেননি বলে দাবি একরাম শেখের। এমনকী শ্রীরাম ট্রান্সপোর্ট ফাইনান্স লিমিটেডে তিনি কোনও ডকুমেন্টসও জমা দেননি বলে জানিয়েছেন। অথচ তাঁর নামেই ঋণের বোঝা দেখা যাচ্ছে।
একরাম জানতে পারেন ২০১৪ সালে এই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ দিন কিস্তি না দেওয়ায় বর্তমানে সেই ঋণের পরিমান বেড়ে হয়েছে কোটি টাকা। সব জেনে, বেসরকারি ফাইন্যান্স কোম্পানিতে চিঠি দিয়ে পুরোটা জানতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী। অভিযোগ ঋণদানকারী সংস্থা শ্রীরাম ট্রান্সপোর্ট ফিনান্স কোম্পানি লিমিটেডের বর্ধমান শাখা থেকে সংস্থার কেন্দ্রীয় অভিযোগের দফতর- কোনও তরফেই এপ্রসহ্গে কিছু জানানো হয়নি। উল্টে বলা নাকি বলা হয়েছে, তাদের তরফে কিছু করার নেই। এছাড়াও জুটেছে দুর্ব্যবহারও।
ফলে বাধ্য হয়ে একরাম শেখ আদালতের দ্বারস্থ হন। বর্ধমান আদালতে থেকে ওই কোম্পানির মুম্বইয়ের হেড অফিসে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠি পাঠানো হয় বর্ধমান ব্রাঞ্চেও। কিন্তু কোম্পানির কোন প্রতিনিধি আসেননি বা তাদের পক্ষ থেকে কোন জবাব দেওয়া হয়নি বলে দাবি একরামের।
বর্তমানে ব্যবসার জন্য একরাম শেখ একটি গাড়ি কিনতে চান। অথচ তাঁর নামে ঋণের কোটি টাকার বাকি রয়েছে বলে সিভিল স্কোরে দেখাচ্ছে। ফলে কোনও কোম্পানি তাঁকে ঋণ দিচ্ছে না। বর্তমানে একরাম শেখ চাইছেন, ওই বেসরকারি ফাইন্যান্স কোম্পানি যে ভুল করেছে তা অবিলম্বে শোধরানোর ব্যবস্থা করুক। তা না হলে উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হবেন তিনি। ব্যবসায়ীর আইনজীবী সৌরভ রায় বলেন,'আদালত থেকে চিঠি করা হলেও ওই কোম্পানি তার কোন উত্তর দেয়নি। এবার একরাম শেখ ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস করবেন।'
গোটা বিষয়টি নিয়ে যদিও মুখে কুলুপ এঁটেছে অভিযুক্ত শ্রীরাম ট্রান্সপোর্ট ফাইনান্স লিমিটেড। ওই কোম্পানির ম্যানেজারের প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। এমনকি মোবাইলে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ম্যানেজার ফোন ধরেননি।