রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বার্তা থেকে করোনা ভাইরাস, 'স্পেশ্যাল হেয়ার কাটিং-য়ে' বিগত কয়েক বছর ধরেই আলোড়ন তুলছেন হাওড়ার সেলুন মালিক রবীন দাস। আর বাংলার ভোট উৎসবের মাঝে একাবারে সকলকে চমকে দেওয়ার মত কীর্তি করে বাহবা কুড়চ্ছেন তিনি।
চুলের ছাঁটে তৃণমূল, বিজেপির প্রতীক অবাক করা সৃষ্টি দিয়েই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন হাওড়ার রবীন দাস। তাঁর পার্লারে এখন মানুষের উপচে পড়া ভিড় প্রিয় রাজনৈতিক দলের প্রতীকের নিজের হেয়ার স্টাইল ফুটিয়ে তোলার। আগামী ২০ মে হাওড়ার দুই কেন্দ্রে ভোট। তার ঠিক আগেই চুলের ছাঁটে দলীয় প্রতীক ফুটিয়ে তুলতে সেলুনে আসছেন তৃণমূল-বিজেপির কর্মী সমর্থকরা।
ভোট যুদ্ধে তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। তৃণমূল কী এবার পারবে তাদের আসন সংখ্যা ধরে রাখতে? মোদীর ৪০০ পারের স্লোগানে বাংলা থেকে কটা আসন পাবে বিজেপি? এক ঝাঁক তরুণ ব্রিগেডকে মাঠে নামিয়ে ২৪-এর ভোটে কী খাতা খুলতে পারবেন সিপিএম? এনিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে বঙ্গ রাজনীতিতে। এবার ভোটের আঁচ সরাসরি গিয়ে পড়েছে হেয়ার স্টাইলে।
প্রচারে ঝড় তুলতে শহরাঞ্চলে দেওয়াল লিখন এখন আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। বেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক প্রচার। ভোটের আগে হেয়ার স্টাইলে দলীয় প্রতীক ফুটিয়ে এক অভিনব প্রচারের সাক্ষী থাকল হাওড়া। চুলের ছাঁটে দলীয় প্রতীক ফুটিয়ে তুলতে তৃণমূল থেকে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের ভিড় মধ্য হাওড়ার রবীন দাসের পার্লারে।
সকাল থেকে রাত তাঁর হাতের সূক্ষ্ম কাজে হেয়ার স্টাইলে তিনি ফুটিয়ে চলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক। ভিড়ের চাপে নাওয়া-খাওয়ার সময়টুকু নেই সেলুন মালিক রবীন দাসের। বাহারি চুলের কাটিংয়ে তিনি এখন পরিচিত এক নাম। করোনা কালীন সময়ে অথবা ফুটবল অথবা ক্রিকেট বিশ্বকাপ, কখনও আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বার্তা রবীনের হাতের বাহারি জাদুর সঙ্গে ইতিমধ্যেই পরিচিত বাংলার অধিকাংশ মানুষ। আর এবার লোকসভা ভোটের ঠিক আগে জেলায় বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকদের আবদার রাখতে হেয়ার স্টাইলেই তিনি ফুটিয়ে তুলছেন রাজনৈতিক দলের প্রতীক। অভিনব এই হেয়ার স্টাইল সঙ্গে বডি পেইন্ট ভোটের প্রচারে যেন বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।
যাকে ঘিরে এত চর্চা সেই রবীন দাস বলেন, '২০০৩ সাল থেকে বিশেষ ধরণের হেয়ার কাটিংয়ে হাতেখড়ি। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপের সময়েও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। রকমারি চুলের ছাঁটের মধ্য দিয়ে নিজেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত সকলের থেকে আলাদা করে তুলেছেন তিনি। নিজেকে একজন শিল্পী বলেই মনে করেন রবীন। তাই বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস বা সিপিএম, যে দলের কর্মী সমর্থকই তাঁর কাছে আসেন, তাঁদেরই চাহিদা অনুযায়ী হেয়ার কাটিং করে দেন তিনি। চুল কাটার পাশাপাশি রেডিওতে নানান অনুষ্ঠান, গানগাওয়া এসবেও বেশ পারদর্শী তিনি। এই বছর শাসকদলের জন্য একটি থিম সং-ও করেছেন রবীন'।