Advertisment

বরাতজোরে রক্ষে, চালকের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচল হাতির দল

হাতির দল লাইন পেরিয়ে জঙ্গলে ঢোকার পরেই গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় ট্রেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Elephants safely cross rail line at sebak

জঙ্গলে ঢোকার আগে রেল লাইনের উপরে উঠে পড়ে ১০-১২ টি হাতির দল। ছবি: সন্দীপ সরকার

ট্রেনচালকের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলো হাতির দল। দূর থেকেই ব্রিজের উপর হাতির গতিবিধি টের পেয়ে গিয়েছিলেন লোকো পাইলট। এমারজেন্সি ব্রেক কষে ট্রেন থামান চালক। হাতির দল লাইন পেরনোর পর ফের গন্তব্যে রওনা দেয় ট্রেন।

Advertisment

বৃহস্পতিবার বিকেলে শিলিগুড়ি জংশন থেকে আলিপুরদুয়ার জংশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। বিকেল ৫ টা নাগাদ গুলমা স্টেশন পার করার পর লোকো পাইলট পরিতোষ দাস এবং সহকারি লোকো পাইলট নরেশ পাল ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস নিয়ে মহানন্দা অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে সেবকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিছুক্ষণ যাওয়ার পরেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে রেল গার্ডার ব্রিজের ওপারে কালো কিছু বস্তু নজরে আসে লোকো পাইলট পরিতোষ দাসের।

তড়িঘড়ি বিষয়টি সহকারি লোকো পাইলট নরেশ পালকে জানান লোকো পাইলট পরিতোষ দাস। ততক্ষণে রেল ট্র্যাকের ওপর চলে এসেছে ৩ থেকে ৪ টি হাতি। রেল গার্ডার ব্রিজের উপর সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় ১০-১২ টি হাতির দল। ব্রিজের আগেই ব্রেক কষে চ্রেন থামিয়ে দেন চালক। বেশ কিছুক্ষণ ধরে হাতির দল লাইন পার হয়ে জঙ্গলে যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত হাতির পুরো দলটি লাইন পার হওয়ার পর,  ফের মহানন্দা অভয়ারণ্যের বুক চিরে সেবকের দিকে রওনা হয় শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। চালক এবং সহকারি চালকের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে যায় হাতির দল।

আরও পড়ুন- দিল্লির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সোনু সুদ, কেজরিকে কৃতজ্ঞতা অভিনেতার

জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়ি সংলগ্ন মরাঘাট এলাকায় ২০১০ সালে রেললাইন পার হতে গিয়ে একসঙ্গে সাতটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। মর্মান্তিক সেই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে বন দফতর এবং রেলমন্ত্রক। দফায়-দফায় আলোচনার পর জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রেলপথে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করে গাড়ি চালাবার প্রস্তাব মেনে নেয় রেল। কিন্তু এরপরেও বেশ কয়েকবার রেলে কাটা পরে হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যদিও তার চেয়েও বেশি বার চালক এবং সহকারি চালকের তৎপরতায় রেলে কাটা পরার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে হাতির দল।

অন্যদিকে, শুক্রবার সকালে ডুয়ার্সের কারবালা চা বাগান এলাকায় নালায় পড়ে যায় একটি হস্তি শাবক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় হস্তি শাবকটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। হস্তিশাবকটিকে ফের হাতির দলের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছে বনদফতর।

publive-image
চা বাগানের নালায় পড়ে যায় হস্তি শাবকটি। ছবি: সন্দীপ সরকার

স্থানীয সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে বাগানে কাজ করতে যাওয়ার সময়  কারবালা চা বাগানের ৩/৭ নম্বর সেকশনের নালার মধ্যে একটি হস্তিশাবককে আটকে থাকতে দেখেন বাগানের কর্মীরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডকে। নালার মধ্যে পরে উলটে গিয়েছিল হস্তি শাবকটি। সেই অবস্থায় হাতিটিকে টেনে তোলার চেষ্টা চালান উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। বনকর্মীদের কিছুটা বেগ পেতে হলেও  শেষ পর্যন্ত নালা থেকে উদ্ধার করা হয় হস্তি শাবকটিকে। হস্তিশাবকটিকে শারীরিক পরীক্ষার পর তার মার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছ বলে জানিয়েছেন বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার শুভাশিস রায়।

publive-image
হস্তি শাবককে নালা থেকে উদ্ধার করলেন বনকর্মীরা । ছবি : সন্দীপ সরকার

জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাগুড়ি সংলগ্ন কারবালা চা বাগানের পাশেই রয়েছে রেতী জঙ্গল। বন কর্মীদের অনুমান,  সম্ভবত সেই জঙ্গল থেকেই হাতির দলের সাথে শাবকটি চা বাগানে চলে এসেছিলো। রাতে কোনওভাবে বাগানের নালায় পড়ে গিয়ে আটকে যায় হস্তি শাবকটি।

siliguri Indian Railways Elephant
Advertisment