এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) খোঁজ করছে 'সিএম'-এর। অবশ্যই যা ভাবছেন তা নয়, কিন্তু সিএম-এর খোঁজ পেলেই রোজ ভ্যালি কাণ্ডে নতুন তথ্য হাতে উঠে আসবে বলে তদন্তকারীদের বিশ্বাস। পাশাপাশি, রোজ ভ্যালি মামলায় ধৃত 'ব্যবসায়ী' সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর প্রতারণা চক্র সম্পর্কেও নতুন তথ্য পাবে ইডি।
ইডি সূত্রে খবর, গ্রেফতারির পর সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি মোবাইল ঘাঁটতে গিয়ে এই 'সিএম'-এর খোঁজ পাওয়া যায়। জানা গেছে, নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই 'সিএম'। ওই ব্যবসায়ীকে পাশে বসিয়ে রেখে সিএম নামে সেভ করা নম্বরে কোনো এক মহিলাকে ফোন করত সুদীপ্ত। ফোনেই তাঁকে অনুরোধ জানাতো কোনো বিশেষ কাজ করে দেওয়ার, "যেমন এর আগেও অনেকবার দিয়েছ"। ওপার থেকে মহিলা কন্ঠস্বরে ভেসে আসত, "কাজ হয়ে যাবে। চিন্তা করিস না। কিন্তু টাকা লাগবে।" কাছে বসা ব্যবসায়ী সহজেই প্রভাবিত হয়ে পড়তেন সুদীপ্তের ছলনায়। কাজ হয়ে যাওয়ার আশায় কোটি কোটি টাকা তাকে দিয়েও দিতেন।
আরও পড়ুন: সুদীপ্তর "সৌজন্যে" ফ্ল্যাট হস্তগত ইডি কর্তার, তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
তদন্তকারীদের ধারণা, এইভাবে বহু লোকের টাকা হাতিয়েছে সুদীপ্ত। কারণ তার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতা, রাজ্যের নানা আইএএস, আইপিএস, এবং অভিনয় জগতের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যে একটা সম্পর্ক রয়েছে, তা সুদীপ্ত আগে থেকেই জানান দিয়ে দিত। এই প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণা করা সহজ ছিল। কাজেই সিএম নাম ব্যবহারকারী মহিলাকে আপাতত হন্যে হয়ে খুঁজছে ইডি।
সূত্রের খবর, ওই মহিলাকে হাতের নাগালে পেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যার প্রথমটি হলো, রোজ ভ্যালি কাণ্ডে নানা নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আসা। ইতিমধ্যে সুদীপ্তর সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, নভেম্বর মাসে রোজ ভ্যালি কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেফতার হয় স্বঘোষিত ব্যবসায়ী সুদীপ্ত। গ্রেফতারির সময় সুদীপ্ত তার বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কের ভয় দেখিয়ে ইডি আধিকারিকদের হুমকি দেয় বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ বেনামি সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারির সময় তার ১৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজ করা হয় এবং তার কাছ থেকে ২৫-২৬ টি ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়।