কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে শেষ পর্যন্ত লোকসভা থেকে বহিষ্কারেরই সুপারিশ করল এথিক্স কমিটি। টাকা আর উপহারের বিনিময়ে (ক্যাশ-ফর-কোয়েরি) সংসদে প্রশ্ন করা এবং লোকসভার পোর্টালে প্রবেশ করার পাসওয়ার্ড অন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে। এনিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেই এথিক্স কমিটি এবার তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারেরই সুপারিশ করল।
চেয়ারম্যান বিনোদ কুমার সোনকার জানিয়েছেন, এথিক্স কমিটির বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে মোট ৫০০ পাতার খসড়া রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। এথিক্স কমিটিতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ছয় সদস্য। আর, বহিষ্কারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এথিক্স কমিটির চার জন। এই রিপোর্ট জমা পড়বে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। ডিসেম্বরে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনে ওই রিপোর্ট পেশ করবেন স্পিকার ওম বিড়লা।
গত মাসে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দুটি চিঠি লিখেছিলেন। তার মধ্যে একটি চিঠি লেখা হয়েছিল স্পিকার ওম বিড়লাকে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল, মহুয়া মৈত্র কর্পোরেট সংস্থা হিরানন্দানি গ্রুপের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঘুষ নিয়েছেন। অন্য চিঠিটি লেখা হয়েছিল আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। সেই চিঠিতে লোকসভার পোর্টালে প্রবেশের জন্য মহুয়া মৈত্রের লগ-ইন পাসওয়ার্ড অন্য কেউ অ্যাক্সেস করছে কিনা, তা পরীক্ষা করার জন্য বৈষ্ণবকে অনুরোধ করেছিলেন দুবে। এনিয়ে গত ২ নভেম্বর লোকসভার এথিক্স কমিটি বৈঠক করেছিল। সেই বৈঠকে সম্মানহানিকর প্রশ্ন করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্র এবং বিরোধীদের পাঁচ জন সদস্য– কংগ্রেসের উত্তমকুমার রেড্ডি, ভি বৈথিলিঙ্গম, সিপিএমের পিআর নটরাজন এবং জেডি(ইউ)-এর গিরিধারী যাদব, আলি বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেছিলেন।
আরও পড়ুন- হাইকোর্টকে বিরাট নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের! ফৌজদারি মামলায় বিপাকে সাংসদ-বিধায়করা
আরও পড়ুন- দুর্নীতির পাহাড়ে অবাধ বিচরণ মিলমালিক থেকে এজেন্টদের, কোন পথে ‘লুঠতরাজ’?
মহুয়া মৈত্র সমালোচনার সুরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে এটা তিনি আগে থেকেই জানতেন। বুধবারই এনিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার একদিন আগেই কীভাবে সংবাদমাধ্যমের হাতে চলে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকারকে অভিযোগপত্রও পাঠিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। এর পাশাপাশি তিনি এক্স-এ বার্তায় লিখেছেন,
আর, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, 'কেন এথিক্স কমিটি তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে? এখনও পর্যন্ত তো কিছুই প্রমাণিত হয়নি!' এর আগে বুধবারই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এক্স-এ দাবি করেছিলেন, মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে লোকপাল। পালটা আদানিদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মহুয়া মৈত্র।