বিদ্যালয়ের মেল আইডিতে নয়, শোকজ চিঠি এলো তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত অঞ্চল দফতরের মেইল আইডিতে। তাও আবার পেশায় শিক্ষক মানিকচক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তণ সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্যার স্বামীর নামে।
১০মার্চ বকেয়া ডিএ'র দাবিতে সরকারি কর্মচারী কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছিলেন মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর হাই স্কুলের দুই শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও সুনন্দ মজুমদার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের নামে শোকজ চিঠি দেয় রাজ্য শিক্ষা দফতর। তবে সেই চিঠি বিদ্যালয়ের মেইল আইডিতে নয়, দেওয়া হয় দলের অঞ্চল দফতরের মেল আইডিতে। শিক্ষকতার পাশাপাশি এই দুই শিক্ষক তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা। সুনন্দ মজুমদার মানিকচক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তণ সভাপতি এবং মোয়াজ্জেম হোসেন মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূল কংগ্রেসে সদস্যার স্বামী। এই দুই শিক্ষকের দাবি ১০মার্চ এনায়েতপুর স্কুল খোলা ছিল। সেইদিন তারা স্কুলে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক হিসাবে স্কুলে যা কাজ তাই করেছেন। সেই দিন জেলা শিক্ষা দফতরে সমস্ত রিপোর্টও দেওয়া হয়েছিল। তবে এমন শোকজ চিঠি কেন জানা নেই।
এই বিষয়ে মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শেখ সহেল আলম মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ, অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের মেইল আইডি ব্যবহার করে কেউ ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করেছেন। কে এই মেইল আইডি ব্যবহার করে এই কাজটি করেছে তা তদন্তের জন্য তিনি মানিকচক থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্তত সভাপতির দাবি ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন ওই দুই শিক্ষক, তারপরেও তার মেইল আইডি ব্যবহার করে কে এই ধরণের ঘটনা ঘটালো তা তার জানা নেই।
মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, কীভাবে এই ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক কে। ইমেইল আইডি হ্যাক করেও এই ধরনের ঘটনা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মালদা জেলা শাসক। প্রয়োজনে সাইবার ক্রাইম থানার সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জেলা বিজেপির দক্ষিন মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারন সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ী বলেন, 'তৃণমূল আর প্রশাসন এক সঙ্গে চলছে। যার ফলে এই ঘটনা ঘটছে। যার ফলে জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে। এটা তার প্রমাণ।'
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী বলেন, 'অভিযোগ যে কোন রাজনৈতিক দল করতে পারে। তবে সেটা সরকার ভুল করেছে। চিঠিটা ডিআই কে করতে হত। এটা একটা মিস্টেক হয়েছে। তবে বিষয়টি ডিআই দেখবে।'