চলছে 'প্রাইড মান্থ'। এই মাসেই সামনে এল বড় খবর। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কন্যা সুচেতনা লিঙ্গ পরিবর্তনে আগ্রহী। সুচেতনা থেকে 'সুচেতন' হতে চান তিনি। বিষয়টি বাস্তবায়ণে আইি পরামর্শের সঙ্গেই মনোবিদেরও পরামর্শ নিচ্ছেন সুচেতনা ভট্টাচার্য। আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে ২১শে জুন দুপুরে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এক 'এলজিবিটিকিউ' কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন সুচেতনা ভট্টাচার্য। সেই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী একজন সমাজমাধ্যমে সুচেতনা সম্পর্কে 'গৌরব মাসের গল্প' শিরোনামের একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। জানান, সুচেতনার বাবা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ। মা মীরা ভট্টাচার্যের পেসমেকার বসেছে। সেই পোস্টেই লেখা রয়েছে, সুচেতনার লিঙ্গ বদলের আগ্রহের বিষয়টি। পোস্টে উল্লেখ, 'সুচেতনা আজ থেকে সুচেতন।'
সুচেতনা নিজেও ওই কর্মশালা সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যাতে তিনি লিখেছেন, 'পিআরসি-র ৮০তম প্রতিষ্ঠা বছর উদ্যাপন উপলক্ষে ১০ জুন, ২০২৩ অ্যাকশন টু হেল্থ অফ দ্য এলজিবিটিকিউ+ কমিউনিটি ওয়ার্কশপে যোগদান করে আমি খুবই গর্বিত ও আনন্দিত। ওয়ার্কশপে প্রতিটি আলোচনার বিষয় সুচিন্তিত এবং প্রাসঙ্গিক। এলজিবিটিকিউ+ মানুষের অধিকার ও সমস্যা নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম, যা আমার মতো ট্রান্সম্যানকে সমৃদ্ধ করেছে, উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এলজিবিটিকিউ+ মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেও খুব ভাল লেগেছে। তথাকথিত মূলস্রোত সমাজের চোখরাঙানি, উপহাস, ঘৃণাকে মোকাবিলা করে এঁরা যে ভাবে লড়াই করছেন, এগিয়ে চলেছেন, তা আমার কাছে বিশেষ শিক্ষণীয়। পিআরসি-র উদ্যোক্তাদের এই প্রয়াসকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ এলজিবিটিকিউ+ বৃত্তের বাইরের সমাজসচেতন মানুষদেরও যাঁরা এই আন্দোলনের শরিক।'
আন্দবাজার পত্রিকা ডিজিটালের প্রতিবেদন অনুসারে, তাঁর ট্রান্স ম্যান হওয়ার কারণ হিসাবে সুচেতনা বলেছেন যে, 'একজন ট্রান্সম্যান হিসেবে প্রতি দিন আমায় যে সামাজিক হেনস্থা হতে হয়, সেটা আমি বন্ধ করতে চাই। আমি প্রাপ্তবয়স্ক। আমার বয়স এখন ৪১ প্লাস। ফলে আমি আমার জীবন সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারি। এই সিদ্ধান্তও সেই ভাবেই নিচ্ছি।' একই সঙ্গে সুচেতনার আবেদন, 'আমার পিতৃ-মাতৃ পরিচয় বা পারিবারিক পরিচয়টা বড় কথা নয়। আমি এটা করছি আমার এই এলজিবিটিকিউ+ আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে। দয়া করে আমার বাবা-মাকে এর মধ্যে টেনে আনবেন না। এখন নিজেকে যিনি মানসিক ভাবে পুরুষ মনে করেন, তিনিও পুরুষ। যেমন আমি। আমি নিজেকে মানসিক ভাবে পুরুষ বলেই মনে করি। আমি এখন সেটা শারীরিক ভাবেও হতে চাই।'
বুদ্ধদেববাবু তাঁর কন্যার ছোটবেলা থেকেই এই বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন বলে দাবি করেছেন। তিনি মনে করন যে, তাঁর সিদ্ধান্তে বাবার সমর্থনই থাকবে।
সমালোচনা সরিয়ে প্রত্যায়ী কণ্ঠে সুচেতনা বলছেন, 'আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। ফলে আমি এটা নিয়ে লড়ে যাব। সেই সাহসটা আমার আছে। কে কী বললেন, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। আমি সকলের সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিতে তৈরি।'