অনুষ্ঠানে গেরুয়া ছোঁয়া! শোভনকে নিয়ে মঞ্চ ছাড়লেন ‘প্রতারিত’ বৈশাখী

"আমাকে বলা হয়েছিল, এটি একটা অরাজনৈতিক  সংগঠন। কিন্তু এখন তো দেখছি আমি প্রতারিত হয়েছি!এখানে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের অনেক প্রতিনিধি আছেন। তাই আমি কিছু বলতে আগ্রহী নই।"

"আমাকে বলা হয়েছিল, এটি একটা অরাজনৈতিক  সংগঠন। কিন্তু এখন তো দেখছি আমি প্রতারিত হয়েছি!এখানে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের অনেক প্রতিনিধি আছেন। তাই আমি কিছু বলতে আগ্রহী নই।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
অনুষ্ঠানে গেরুয়া ছোঁয়া! শোভনকে নিয়ে মঞ্চ ছাড়লেন ‘প্রতারিত’ বৈশাখী

অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরোচ্ছেন বৈশাখী। নিজস্ব চিত্র

তাঁরা এলেন, দেখলেন, চলে গেলেন। আর সেই যাওয়ার দাপটে ভেস্তে গেল গোটা কর্মসূচিটাই। এভাবেই সপ্তাহান্তের সন্ধ্যায় ফের চর্চায় উঠে এলেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিনে ঘটনার কেন্দ্রে বৈশাখী একাই, শোভন নেহাতই পার্শ্বচরিত্র।

Advertisment

রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার অভিজাত প্রেক্ষাগৃহে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল বেঙ্গল থিংকস নামের একটি সংগঠন। আলোচনার বিষয় ছিল - সমকালীন বাংলায় ধর্ম, আধ্যাত্মবাদ এবং রাজনীতির আন্তঃসম্পর্ক। বক্তার তালিকায় শোভন-বৈশাখী এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের এক মহারাজ ছাড়া নাম ছিল তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের। সব্যসাচী অবশ্য আসেন নি। সূত্রের খবর, আয়োজক সংগঠনটি সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ। নির্বাচনের প্রাক্কালে গেরুয়া সংগঠনের মঞ্চে শোভন-বৈশাখী ও সব্যসাচীর সম্ভাব্য উপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় বেশ খানিকটা বিতর্ক। তবে দিনের শেষে সেই বিতর্ককে ‘রাসেলচিত’ ভঙ্গিতে মাঠের বাইরে ফেললেন বৈশাখী।

সভা শুরুর সময় ছিল সন্ধ্যা ছ'টা। শোভন আসেন ছ'টা চব্বিশে, পরণে মেরুন কলার দেওয়া সাদা পাঞ্জাবি আর পাজামা। মিনিট ছ'য়েক পর হলে ঢোকেন গোলাপি শাড়ি ও ম্যাচিং ব্লাউজের বৈশাখী। সঙ্গে তাঁর সিগনেচার স্টাইলে গয়না। আয়োজকদের অনুরোধে ভারতমাতার ছবিতে মালাও দেন তাঁরা। এইসময়ই মঞ্চে ওঠেন বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া। তাঁকে দেখেই ভুরু কুঁচকে যায় বৈশাখীর। উদ্যোক্তাদের কাছে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। মঞ্চে তখন প্রথম বক্তা বক্তৃতা করছেন। দ্বিতীয় বক্তা হিসাবে বৈশাখীর নাম ঘোষণা করেন আয়োজকরা। মাইক নিয়েই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে থাকেন তিনি।

Advertisment

kolkata mahyor sovon chatterjee baisakhi banerjee দ্রুত প্রস্থান শোভনের। নিজস্ব চিত্র

বৈশাখী বলেন, "আমাকে বলা হয়েছিল, এটি একটা অরাজনৈতিক  সংগঠন। কিন্তু এখন তো দেখছি আমি প্রতারিত হয়েছি!এখানে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের অনেক প্রতিনিধি আছেন। তাই আমি কিছু বলতে আগ্রহী নই। আমার কথা বলার মানসিকতাই নেই। গত দু-তিন দিন ধরে মিডিয়ায় যা লেখা হয়েছে, আমি তা বিশ্বাস করিনি। আয়োজকদের কথায় ভরসা করেছিলাম। এখন বুঝতে পারছি, ভুল হয়েছিল। ভারতমাতা আরএসএস, বিজেপির সম্পত্তি নয়।" ততক্ষণে হল জুড়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। তার মাঝেই বৈশাখী বলতে থাকেন, "শোভনদার কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। আমিই এই সংগঠনের কথা ওঁকে বলি। তাই উনি এসেছেন। আয়োজকেরা মনে রাখবেন, ব্যক্তি জীবন থেকে সামাজিক জীবন - কোথাও আমি সততার সঙ্গে আপোষ করি না। আপনারা আমার সঙ্গে অসততা করলেন! আমি এই মঞ্চে থাকব না।"

বক্তৃতা শেষ করেই মঞ্চ থেকে নেমে লিফটের দিকে হাঁটতে থাকেন বৈশাখী। সঙ্গে সঙ্গে হল প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। বৈশাখীকে ঘিরে ধরেন গণমাধ্যমের লোকজন এবং উৎসাহীরা। বৈশাখী বলেন, "আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। এখানে শিশিরবাবু সহ বিজেপির লোকজন আছেন। আমি এখানে কেন থাকব!" শোভন তখন কিছুটা পিছনে, একা মঞ্চ থেকে নামছেন। দৃশ্যতই তিনি যেন পার্শ্বচরিত্র। বেরিয়েও প্রাক্তন মেয়র বিশেষ কিছু বলতে চাননি। গাড়িতে ওঠার আগে শুধু বলেন, "সবাই সব কিছু বুঝতে পারছেন। কী আর বলব!"

সব্যসাচী এদিন আসেন নি। বৈশাখী-শোভন চলে যাওয়ার অনুষ্ঠানটিই পণ্ড হয়ে যায়। আয়োজকদের পক্ষে দীপ্ত বক্সি বলেন, "আমরা সত্যিই অরাজনৈতিক। ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তি এসেছিলেন মাত্র। ওঁরা ভুল বুঝে চলে গেলেন।" শিশির বাজোরিয়ার কথায়, "আমি তো এখানে আমার দলের প্রতিনিধি হয়ে আসিনি। তাও কেন চলে গেলেন বুঝতে পারছি না।"

tmc bjp kolkata news