Bangladeshi Student Fact Check: সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে বাংলাদেশে জুলাই মাসের কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই ছাত্রনেতা, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে গাড়ি চাপা দেওয়ার অভিযোগে এক ভারতীয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই পোস্টে আশীষ পুরোহিত নামে এক ব্যক্তির ভারতীয় আধার কার্ড, ও একই ব্যক্তির বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি-সহ একটি গ্রাফিক কার্ড বানানো হয়েছে। সঙ্গে ইনসেটে আরেক ব্যক্তির ছবি দেখা যাচ্ছে। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "সারজিস ও হাসানাতের গাড়িতে ট্রাক চাপা দেওয়া চালকের পরিচয় মিলেছে। এদেশ ছাড়ো ভারতীয় ও হাসিনার দালালরা। তোমাদের কর্মকান্ডই তোমাদের পায়ে কুড়াল মারছে।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202412/2_30.jpg)
এই পোস্টের উপর লেখা হয়েছে, "বুঝতে পারছেন? তাদের ২য় ঘর হচ্ছে ভারতে। বাংলাদেশে মুসলিম হ'ত্যা করে ভারতে পালাবে।"
আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দুই ছাত্রনেতাকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায় আশীষ পুরোহিত নামক এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারির ঘটনাটি ভিন্ন।
আরও পড়ুন বাংলাদেশ সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত? ভাইরাল ভিডিওর সত্যিটা জানুন
কীভাবে জানা গেল সত্যি
সবার প্রথম কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি যে এই দুই ছাত্রনেতার গাড়ির সঙ্গে দুর্ঘটনার মামলা কাকে বা কোন কোন ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয় যে গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তির নাম মজিবুর রহমান ও ছেলে রিফাত মিয়া। গ্রেফতারির পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু'দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করে।
এছাড়াও অন্যান্য কিছু খবরে আমরা গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তির ছবিও দেখতে পাই। যদিও এই খবরে বা কোনও খবরেই কোথাও এই গাড়ি চাপা দেওয়া কাণ্ডে আশীষ পুরোহিত নামে জড়িত কোনও ভারতীয় ব্যক্তির উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অথবা যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা ভারতীয়, এমন তথ্যও কোথাও উল্লেখ করা হয়নি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202412/untitled_0.jpg)
এরপর আমরা আশীষ পুরোহিতের নাম-সহ কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত সময় নিউজ এবং দেশ রূপান্তর-সহ বেশ কিছু নিউজ রিপোর্ট মেলে। সেই খবর অনুযায়ী, চট্টগ্রামের বাসিন্দা আশীষ পুরোহিত অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় তাঁকে মিরসরাই উপজেলার অলিনগর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি।
গ্রেফতারির পর জানা যায় যে বছর ৬৫-র আশীষ পুরোহিতের ভারত ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম এনায়েত বাজার এলাকার ২৩৪, এস এ চৌধুরী লেনের মৃত নির্মল চন্দ্র পুরোহিতের ছেলে। আবার, তাঁর কাছে থেকে যে আধার কার্ড উদ্ধার হয়েছে সেখানে ঢাকুরিয়া এলাকার ১৬ নস্কর পাড়া লেনের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার একটি প্রতিবেদনেও আশীষ পুরোহিতের বিষয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের সীমান্ত বাহিনীর এক কর্নেলকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, আশীষ পুরোহিত অলিনগর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে আটক করে রক্ষীদের খবর পাঠান। তল্লাশি চালিয়ে পুরোহিতের কাছে থেকে আধার কার্ডের একটি স্ক্যান কপি ও বাংলাদেশি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চিকিৎসার জন্য তিনি অবৈধভাবে ভারতে আসার চেষ্টা করছিলেন বলে জানান।
এর থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে ছাত্রনেতাদের গাড়ি দুর্ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় আধার কার্ড থাকা এই ব্যক্তির কোনও সম্পর্ক নেই বললেই চলে।
[এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে bangla.aajtak.in, যা অনলাইনে ভুল তথ্য এবং ডিপফেক ভিডিও শনাক্তকরণে Shakti collective-এর অংশ]