কান পরিস্কার করতে গিয়েছিলেন কাটোয়ার কোয়ারা গ্রামের যুবক শ্যামল প্রামাণিক। আর তাতেই চরম বিপত্তি। কান ঝরঝর করে রক্ত বেরচ্ছিল। যা বন্ধ করতে কানের ছিদ্রে এমসিল দিলেন হাতুড়ে। আর তাতেই সঙ্কটাপন্ন অবস্থা হয় ওই যুবকের। পরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎক ভাস্করজ্যোতি বর্মণের চেষ্টায় কান থেকে এমসিল বের করা হয়। তবে শ্যামলের কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পলাতক অভিযুক্ত হাতুড়ে।
শ্যামল প্রামাণিক পেশায় গাড়ি চালক। গত বুধবার দুপুরে স্থানীয় সিঙ্গি মোড় বাসস্ট্যাণ্ড এলাকার এক হেতুড়ের কাছে কান পরিষ্কার করান তিনি। কান পরিস্কারের সময় অত্যাধিক খোঁচাখুঁচিতে শ্যামলের কান থেকে রক্ত বের হতে শুরু হয়। সেই রক্ত ঝরা বন্ধ করতে হেতুড়ে এমসিল আঠা শ্যামলের কানের ছিদ্রে লাগিয়ে দেন বলে দাবি অভিযোগ করেছেন শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতা প্রামাণিক।
সঞ্চিতা দেবীর কথায়, 'এমসিল আঠা কানে দেওয়ার সময় ওই হাতুড়ে আমার স্বামী শ্যামলকে বলেছিল, এই ওষুধে কান থেকে রক্ত ঝরে পড়ায় বন্ধ হবে। লাগানোর কিছুক্ষণ পরে এমসিল আঠার অংশ নিজে থেকে খুলে পড়েযাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা হয় না। হাতুড়ের কাছথেকে বাড়িতে ফিরেই শ্যামল অসুস্থ হয়ে পড়েন। কানের অসহ্য যন্ত্রণায় সে ছটফট করতে শুরু করেন। অজ্ঞানের মত অবস্থা হয় শ্যামলের।'
হয়।
ওই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে শ্যামল প্রামাণিককে তার আত্মীয়রা কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখান। চিকিৎসক বুঝতে পারেন শ্যামলের কানে কিছু একটা শক্ত জিনিস ঢুকে আছে। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। সেই মত অস্ত্রপচার হয়। বোঝা যায় ওই শক্ত পদার্থটি আসলে এমসিল জাতীয় শক্তিশালী আঠা। যে আঠা সাধারণত জলের পাইপের ছিদ্র বন্ধ করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শ্যামলবাবুর পরিবার সদস্যরা জানান, তাঁরা হাতুড়ের পরিচয় জানেন না। শ্যামল সুস্থ হলে হাতুড়ের পরিচয় জানতে পারবেন। শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতা এদিন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, 'ওই হেতুড়েকে খুঁজে বের আমি আইন মাফিক শাস্তির ব্যবস্থা করবো।'
স্তম্ভিত কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মণ। তিনি বলেন, 'চিকিৎসক জীবনে এই প্রথম এই ধরণের রোগী পেলাম। কানের চিকিৎসায় এমসিল আঠার ব্যবহার কার্যত নজিরবিহীন। পরিবারের লোকজন শ্যামলবাবুকে দেরি করে কাটোয়া হাসপাতালে এলে ওনার প্রচুর ক্ষতি হতে পারত।'