Advertisment

নির্মীয়মাণ ফারাক্কা সেতু বিপর্যয় ঘিরে রাজনৈতিক তরজা

কেন্দ্রীয় সংস্থার তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা সেতুর বিপর্যয়ের জন্য মোদী সরকারকেই দায়ী করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও কংগ্রেস।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রবিবার ভেঙে পড়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের ওপরে নির্মীয়মাণ সেতুর একাংশ।

রবিবার ভেঙে পড়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের ওপরে নির্মীয়মাণ সেতুর একাংশ। সঠিক কী কারণে এই বিপর্যয় তা এখনও স্পষ্ট নয়। গাফিলতির পাশাপাশি নকশার গলদও সেতুর ভেঙে পড়ার কারণ হিসাবে উঠে আসছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান হবে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রক। তবে, সেতু দুর্ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কেন্দ্রীয় সংস্থার তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা সেতুর বিপর্যয়ের জন্য মোদী সরকারকেই দায়ী করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও কংগ্রেস। স্থানীয় বিজেপি সাংসদের দাবি, 'দোষীদের রেয়াত করা হবে না।'

Advertisment

স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী সেতু ভেঙে পড়ার জন্য 'কাটমানিকেই' দায়ী করেছেন। গঙ্গা ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর মালদহ-ফরাক্কা সংযোগকারী সেতু নির্মাণের জন্য একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে। বরাত পাওয়া সংস্থা ভাল করে সেতু বানাচ্ছিল না বলে অভিযোগ করেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। তাঁর অভিযোগ, 'কাটমানি মেলায় ওই সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সড়কমন্ত্রকের অফিসারেরা। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে।'

ফারাক্কা সেতু ভেঙে পড়ার পরই বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের দায়িত্বাপ্রাপ্ত মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির সঙ্গে দেখা করেন। পরে তিনি বলেন, 'ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু গাফিলতি ছিল। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। নিহত ও আহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মন্ত্রী এইসব দাবি মেনে নিয়েছেন। জানিয়েছেন সরকারের তরফে তদন্ত করা হবে।'

আরও পড়ুন: নকশাতেই গোলমাল ছিল দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতুর? শ্চীনের মৃত্যুতে নয়া মোড়

দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, 'দোষীদের রেয়াত করা হবে না। তবে, প্রথমে কারণ অনুসন্ধান করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে।' রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, 'কেন্দ্র অবিলম্বে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করুক। দোষীরা যেন শাস্তি না পায় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।'

ভেঙে পড়ল মালদহ-ফরাক্কা সংযোগকারী নির্মীয়মাণ সেতুর একটি অংশ। মালদহের বৈষ্ণবনগরের ঘটনা। রবিবার সন্ধ্যায় নির্মীয়মাণ এই ব্রিজের ১ ও ২ নম্বর পিলারের মধ্যে গার্ডার বসানোর কাজ চলছিল। সে সময় বিপত্তি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় এক ইঞ্জিনিয়র সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বছর দেড়েক আগেই ফারাক্কা ব্যারেজের ওপরে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তার মধ্যেই এই বিপত্তি। মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকায় সেতুর দু’টি স্তম্ভ তৈরি হয়েছে। সেই স্তম্ভের উপরে যে অংশটি সেতুটিকে ধরে রাখবে, রবিবার বিকেল থেকে সেই অংশের কাজ চলছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আচমকা প্রথম ও দ্বিতীয় স্তম্ভের উপরের অংশটি ভেঙে পড়ে। তার উপরে থাকা ক্রেনটিও ভেঙে পড়ে।

ফারাক্কা সেতু নির্মাণের কাজে দায়িত্বে ছিলেন উদয়বীর সিং। তিনি সেতুর নকশা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, 'যে লোহার গার্ডার পড়ে গিয়ে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল তার নকশাটা নিয়ে আমাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। কর্তৃপক্ষের নজরেও বিষয়টি আনা হয়েছিল। যে কারণে তিন মাস কাজ বন্ধ ছিল। যে ডিজাইনার এই সেতুর নকশা তৈরি করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন নকশার যদি সন্দেহ থাকে তাহলে তোমরা ঠিক করে নাও। কিন্তু অনুমোদিত নকশা কোনও লিখিত অনুমোদন ছাড়াই আমরা কি করে পরিবর্তন করবো। তাই আমরা ডিজাইনারকে বলেছিলাম তাহলে লিখিত দিন। কিন্তু কোনও চিঠি আসেনি। ফলে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়।'

Read  the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Bridge Collapse West Bengal
Advertisment