গঙ্গাসাগরের প্রস্তুতি বৈঠকে অশান্তির বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন প্রশাসনের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'অনেক মানুষ আসবেন। দেখবেন কেউ যেন বন্দুক নিয়ে ঢুকে না পড়ে। অনেকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার জন্য পরিকল্পনা করবে। সেগুলি আমাদের ভেস্তে দিতে হবে।' তবে নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নাম করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
কোভিড মহামারির কারণে গত দু’বছর গঙ্গাসাগর মেলা হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রেখে। তবে বাংলায় সংক্রমণ এখন তলানিতে। ভারতেও এর প্রভাব কম। তাই আগামী জানুয়ারিতে গঙ্গাসাগর মেলায় বিধি আরোপ হবে না। ফলে সাগরে প্রচুর পূর্ণ্যার্থীর সমাগম হবে অনুমান করা হচ্ছে।
গঙ্গাসাগর মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুণ্যার্থীরা যাতে কেউ যেন স্টোভ না নিয়ে যান সেদিকে লক্ষ রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে- বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা মানুষ ব্যাগে করে স্টোভ নিয়ে মেলা যান। হোগলাপাতার ঘরের পাশে ওভাবে স্টোভে রান্না করলে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তাই স্টোভ নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
প্রস্তুতি বৈঠকে পুলিশ থেকে শুরু করে নৌবাহিনী, বন্দর, এনডিআরএফ, রেব সহ সব বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। রেলের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য এবার হাওড়া ও শিয়ালদহে আরও বেশি ট্রেন চালানো হোক। সেইসঙ্গে কোন মন্ত্রী, বিধায়করা কোথায় দায়িত্বে থাকবেন তাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সার্বিকভাবে মেলার দেখভাল করবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসুরা।
এবার ৮ থেকে ১৭ জানুয়ারি চলবে গঙ্গাসাগর মেলা। ১৪ এবং ১৫ জানুয়ারি পুণ্যস্নান। মেলায় যাতায়াতকারীদের জন্য ২ হাজার ২৫০টি সরকারি বাস ও ৫০০টি বেসরকারি বাসের বন্দোবস্ত থাকছে।
পুণ্যার্থীদের সুবিধায় সব বাসে থাকবেন সাগরবন্ধুরা। নিরাপত্তার স্বার্থে থাকবে ১০০টি অ্যাম্বুল্যান্স, ১টি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স এবং ৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। স্থানীয় হাসপাতালগুলিকে বেড বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মেলার নিরাপত্তার নজরদারিতেথাকবে মেগা কন্ট্রোলরুম, ১১৫০ সিসিটিভি। ড্রোনেও চলবে নজরদারি। থাকবে ১০টি পার্কিং ও ১১টি বাফার জোন। যাতায়াতের জন্য থাকছে ৩২টি ভেসেল, ২১টি জেটি, ৪টি বার্জ, ১০০টি লঞ্চের ব্যবস্থা। গঙ্গাসাগর মেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যাতে না ঘটে তাই ১০টি অস্থায়ী দমকল কেন্দ্র তৈরি করা হবে। থাকবে ২৫টি ইঞ্জিন।