রাজ্যের 'বেহাল' আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নে ফের সরব হলেন রাজ্য। তাঁর অভিযোগ, 'রাজ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। মানুষ এতটাই সন্ত্রস্ত যে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে। আমি রাজ্যপাল হিসেবে শপথ গ্রহণের পর থেকে এই বিষয়ে সরব হয়েছি। গণতন্ত্র আর ভয় একসঙ্গে থাকতে পারে না।
নবান্নের সঙ্গে সংঘাত উসকে জগদীপ ধনকড়ের আরও মন্তব্য, 'বাংলার মতো সংস্কৃতিমনস্ক রাজ্যে ভয়ের কোনও জায়গা থাকতে পারে না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।'
যদিও তাঁর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্যপালের যদি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে সেটা কেন্দ্রের নজরে আনুক। তাঁর মন্তব্য, 'সংবিধান মোতাবেক রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে কেন্দ্রকে জানাক। এভাবে বলাটা অসাংবিধানিক এবং দুর্ভাগ্যজনক।'
এর আগে একবার প্রশাসনের রাজনীতিকরণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেবার রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস নিয়োগ নিয়ে ফের মমতা প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল জপদীপ ধনকড়। এই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে যারা “রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে” যুক্ত থাকবেন তাঁদের পরিণতি ভোগ করতে হবে।
সেবার তাঁর কটাক্ষ ছিল, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরের প্রতি। সেই প্রসঙ্গেই এই বার্তা দেন রাজ্যপাল। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর কালনার সভায় তৃণমূলে যোগ দেন এই প্রাক্তন আইপিএস।
গত বছর ডিসেম্বরও রাজ্য পুলিশের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ধনকড়। প্রাক্তন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ যিনি রাজ্য সুরক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁর কাজের সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যপাল।
সাম্প্রতিক একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের গভর্নর বলেন, “আশ্চর্যের বিষয় যে রাজ্য সরকার নিযুক্ত এক ডজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক পদে রয়েছেন। তাদের কর্মসংস্থান এমন যে আপনি যদি রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা উপদেষ্টার পদটির সঙ্গে তুলনা করেন, ডিজিপি পোস্টটি এটির চেয়ে আরও ছোট দেখায়। এই জাতীয় ব্যবস্থা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল নয়। তাঁদের অবশ্যই নিজেদের বিবেক নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সঠিক বিষয়ে কাজ করা উচিত।”
তিনি এও জানান যে সে সকল রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা যারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন এবং সরকারী সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার করবেন তাঁরা ‘ভুল কাজ করবেন’। রাজ্যপাল বলেন, “কেউ যদি মনে করেন আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন সে ব্যাপারে আমি তাঁদের সতর্ক করছি। এটা কোনও মূল্যেই সহ্য করা হবে না। যারা করবে এই কাজ তাঁদের ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আসলে পুলিশদের উপর থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমিও সেদিকে নজর রাখছি।”