Advertisment

নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: 'চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২৭ লাখ', আইনজীবী বিকাশরঞ্জনকে নিশানা কুণালের

কোর্টের নির্দেশ ছাড়া নিয়োগ অসম্ভব বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মধ্যস্থতাকারী এই তৃণমূল নেতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
few lawyers are ruining job seekers deliberately creating legal-complications kunal ghosh , নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২৭ লাখ নিয়েছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন! বিস্ফোরক দাবি কুণালের

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

নিয়োগের দাবি নিয়ে গত বুধবার এসএলএসটি-র শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা গিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সেদিনই ওই চাকরিপ্রার্থীরা গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতেও। তবে সেদিন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা হয়নি তাঁদের। কারণ বাড়িতে ছিলেন না কুণাল। শনিবার ফের কুণাল ঘোষের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এসএলএসটি-র শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা। আলোচনা শেষে কুণাল ঘোষের সাফ দাবি, 'যাঁরা আজ দেখা করতে এসেছেন তাঁরা সকলেই যোগ্য চাকরিপ্রার্থী।' নিয়োগ জটের জন্য চাঁচাছোলা ভাষায় তৃণমূল মুখপাত্র দায়ী করেন আইনজীবী তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যকে।

Advertisment

২০১৬ সালের পরীক্ষার্থী ছিলেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। অভিযোগ, আদালতের রায় তাঁরা চাকরি পেয়ে গেলও নিয়োগ মিলছে না। প্রতিবাদে এসএসসি যুব ছাত্র মঞ্চের ব্যানারে পথে বসেছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যেই ১৫ থেকে ১৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল এদিন কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের একটাই দাবি, নিয়োগ হোক দ্রুততার সঙ্গে। আর তার জন্য যা যা করা দরকার, তা সরকার করুক।

বৈঠক শেষে কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'সুপারিশপত্র থাকা সত্ত্বেও এই চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। আইনি জটিলতা রয়েছে, কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এক শ্রেণির আইনজীবী চাকরিপ্রার্থীদের সর্বনাশ করছেন। মিথ্যে সমবেদনার নাম করে এদের মামলা লড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, অন্যদিকে বিরুদ্ধে পক্ষের হয়ে মামলা লড়ছেন। চাকরিপ্রার্থীরা আমাকে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাই ধর্না মঞ্চে গিয়েছিলাম। ওঁদের দাবির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে উদ্যোগে ওঁরা সুপারিশপত্র পেয়েছেন। কিন্তু মামলা করে নিয়োগের পথে বাধা তৈরি করা হচ্ছে।'

এরপরই বিস্ফোরক অভিযোগ করে বসেন কুণাল ঘোষ। বলেন, 'রাজনীতি করার জন্য উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, বিকাশ ভট্টাচার্য ও তাঁর সঙ্গী আইনজীবীরা মামলা লড়ার জন্য এই যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ২৭ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই তিনি গরিবের নেতা! এখন অযোগ্যপ্রার্থীদের দিয়ে মামলা করিয়ে যোগ্যদের চাকরি আটকে রেখেছেন। ওঁরা আমাকে অনুরোধ করেছেন হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ তোলার জন্য রাজ্য সরকার যেন ব্যবস্থা করেন। আমি সংশ্লিষ্ট জায়গায় বিষয়টি পৌঁছে দেব। বিকাশবাবু দয়া করে এদের রাজনীতির জন্য ব্যবহার করবেন না।'

আরও পড়ুন- মুখ হিরণ! ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বিজেপির! বিরাট দায়িত্বে অভিনেতা-বিধায়ক

কুণালের দাবিকে মান্যতা দেন চাকরিপ্রার্থী দীপঙ্কর জানা। তিনি বলেন, 'বিকাশবাবু একজন সিনিয়র আইনজীবী। ওঁর জুনিয়ররা মামলা লড়ার জন্য আমাদের থেকে ২৭ লাখ নিয়েছেন। এখন উনিই আমাদের বিরুদ্ধপক্ষের হয়ে মামলা লড়ছেন।' চাকরি প্রার্থী শিবানি রায় বলেন, 'আমাদেরকে নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। দয়া করে এই রাজনীতি বন্ধ করা হোক। কেউ যেন আমাদের চাকরি পাওয়ার পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। এটাই আমাদের অনুরোধ।'

পাল্টা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'কোনও আইনজীবী লাখ লাখ টাকা রোজগার করলে ওঁর যদি দুঃখ হয়ে থাকে, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দিলেই হয়ে যায়। তাহলে আর মামলার জায়গা থাকে না। কুণালবাবু আমার এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করুন। মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে যোগ্যদের চাকরির বন্দোবস্ত করুন।'

গত সপ্তাহেই ২০১৬ সালের এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। সেদিন ওই মঞ্চ থেকেই শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকেও ফোন করেছিলেন তিনি। এদিন নিয়োগ দিতে রাজ্য আগ্রহী তা বোঝাকে কুণাল বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে ছিলেন। আমি ওনার হোয়াটস অ্যাপে চাকরি প্রার্থীদের দাবিপত্র পাঠানোর পর উনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। অফিসারদের পাঠিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক হয়। শূন্যপদ তৈরি করে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয। ঠিক তখনই আইনজীবীদের একাংশ ফের আদালতে মামলা করেন। ফলে আদালতের স্থগিতাদেশ না উঠলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।'

Kunal Ghosh WB SSC Scam bikashranjan bhattacharya slst job aspirants protest
Advertisment