Advertisment

অভিনব কায়দায় লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, দুঁদে জালিয়াতদেরও ঘোল খাওয়াবেন এই হেডমাস্টার!

রাজ্যের সরকারি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
fir filed against head master accused of financial corruption

ছবির বাঁদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাস। ছবির ডানদিকে, স্কুলের অন্য শিক্ষকরা।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জেরবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় বহু শিক্ষকের যেমন চাকরি চলে গিয়েছে তেমনই শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী-সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক শীর্ষ কর্তার। এই আবহেই

এবার বেনজির আর্থিক দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের হল পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

Advertisment

পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ ব্লকের চকচন্দন দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলের 'গুণধর' প্রধান শিক্ষকের নাম প্রশান্ত দাস । স্কুল পরিদর্শকের সই জাল করে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা-সহ পড়ুয়াদের পোশাক কেনার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এফআইআর দায়ের তো হয়েছেই, এমনকী ওই প্রধান শিক্ষকের বেতনও বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষা দফতর। জেলার মাধবডিহি থানার

পুলিশ হন্যে হয়ে খোঁজ চালিয়েও কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা ওই শিক্ষকের নাগাল এখনও পায়নি। তারই মধ্যে ওই শিক্ষক বর্ধমান জজ কোর্টে আগাম জামিনের যে আবেদন করেছিলেন সেটাও খারিজ হয়ে গিয়েছে।

চকচন্দন দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন প্রশান্ত দাস নামে ওই ব্যক্তি। তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়টি সুনাম খোয়াতে শুরু করে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। তাঁদের দাবি,

প্রশান্ত দাসের দুর্নীতি ও জালিয়াতির প্রভাব স্কুলের পঠন-পাঠনেও পড়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিলও। এমনকী স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত হয়নি বলে অভিযোগ সহ-শিক্ষক ও অভিভাবকদের।

এসব অভিযোগের তদন্তে স্কুল পরিদর্শক সুশান্ত ঘোষ (রায়না ৪ চক্র ) গত ১৭ আগষ্ট স্কুলে গেলে তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। ওই দিনই সব অভিযোগ মেনে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের ইঙ্গিত দিয়ে যান স্কুল পরিদর্শক।

publive-image
চকচন্দন দুর্গাদাস হাই স্কুল।

সেই মতো কিছুদিন আগে রায়না ৪ চক্রের এসআই সুশান্ত ঘোষ মাধবডিহি থানায় চকচন্দন দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। প্রতারণা, স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট, ব্যাঙ্কের সঙ্গে জালিয়াতি করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। এসআই সুশান্ত ঘোষ পুলিশে অভিযোগের আকারে জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি চেকে, স্কুলের গৃহীত সিদ্ধান্তের খাতায় তাঁর সই জাল করা হয়েছে। এছাড়াও চারটি চেকে তাঁর সই জাল করে টাকা তোলা হয়েছে। এমনকী পড়ুয়াদের

পোশাকের জন্যে চেকে '১০০০ টাকা' লেখা থাকলেও চেকে জালিয়াতি করে একবার ৬১ হাজার টাকা ও আরও একবার ৭১ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। একই রকম জালিয়াতি অন্য ক্ষেত্রেও ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুন- ‘২৪-এর ভোটের আগে আজ টেস্টের ফল, ধূপগুড়িতে শেষ হাসি হাসবে কে?

২০২১ সালের ২২ মার্চ সর্বশিক্ষা মিশনের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬১০ টাকা তোলার জন্যে চেক লেখা হয়েছিল। কিন্তু দু'দিন পর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ৯২,৬১০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এসব ছাড়াও ২০২০ ও ২০২১ আর্থিক বছরেও সর্বশিক্ষা মিশনের তহবিল নিয়ম মেনে খরচ হয়নি বলে পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন এসআই।

এসআই সুশান্ত ঘোষ বলেন, "চলতি বছরের ৩ জুলাই থেকে প্রধান শিক্ষক বেপাত্তা। ই-মেলে তাঁকে তিন বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের খোঁজ মেলেনি। স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্যে প্রধান শিক্ষককে বলা হলেও তিনি তা করেননি। প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের একজন শিক্ষককে টিচার-ইন চার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।''

অন্যদিকে, স্কুলের শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ''আমরা চাই পড়ুয়া এবং স্কুলের স্বার্থে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর যথাযথ ব্যবস্থা নিক। অচলাবস্থা কাটিয়ে স্কুলটি যাতে ফের আগের অবস্থায় ফিরতে পারে সেই চেষ্টাই করা উচিত।''

Purba Bardhaman West Bengal FIR Corruption
Advertisment