জার্মান শেপার্ড, ল্যাব্রাডর কিমবা ডোবারম্যান নয়। একেবারে 'দেশি' কুকুর। ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে এখন আশার খুব নাম ডাক। সকাল সকাল উঠে প্রশিক্ষকের ইশারা বুঝে কাজ করতে পারলেই জুটে যাবে খান কতক মেরি গোল্ড। শুধু ধারে কাছে সারমেয় দেখলেও মেজাজ চড়ে যাবে সপ্তমে। বলছি রাজ্য পুলিশের বিস্ফোরক ও মাদক অনুসন্ধানকারী স্কোয়াডের প্রথম দেশি কুকুর আশা-র কথা।
২০১৭-এর ডিসেম্বরে পুলিশ ট্রেনিং অ্যাকাডেমির পাশেই এক রাস্তা থেকে উদ্ধার করে আনা হয় মাস তিনেকের আশা-কে। পাড়ার লোকজন একেবারে ঢিল ছুঁড়ে, পিটিয়ে মেরেই ফেলছিল আশাকে।
ছবি- শশী ঘোষ
প্রথমে পোষ্য হিসেবেই রেখে দেওয়া হয়েছিল আশাকে। কিন্তু ইনস্পেক্টর জেনারেল দেখতে চাইলেন দেশি কুকুরের ক্ষমতা কতটা। পসচিম্বং পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট হেমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, "খুব তাড়াতাড়ি আমরা বুঝে গেছিলাম আশার ঘ্রাণশক্তি প্রখর", দেড় বছরের মধ্যে প্রথম সারির প্রশিক্ষিত কুকুরদের মধ্যে চলে আসে আশা। বিলিতি কুকুরের চেয়ে কোনো অংশে কম তো নয়ই, বরং কখনও কখনও ওদের চেয়েও বেশি দক্ষতা প্রমাণ করেছে আশা।
প্রশিক্ষণরত আশা। ছবি- শশী ঘোষ
আরও পড়ুন, “বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়”
১৬ বছর ধরে পুলিশের কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসা সৌমেন্দ্রনাথ দে জানালেন, "আশা অর সমকক্ষীয়দের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততমদের একজন। ৬ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত লাফাতে পারে। কিন্তু মানুষকে বিশ্বাস করতে আশার অনেক সময় লেগেছে। স্থানীয়রা ওকে একসময় পাথর ছুঁড়ে, গায়ে গরম জল ঢেলে এতই উত্যক্ত করেছে, মানুষ দেখলে পালিয়েই যেত আশা"।
আশাকে প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে প্রশিক্ষকরা বুঝেছে ভারতীয় জলবায়ুতে বিলিতি জাতের কুকুরের মানিয়ে নেওয়া খুব সহজ নয়। আশার ক্ষেত্রে অ্যাক্লেমাটাইজেশনে কোনও অসুবিধেই হয়নি।
আপাতত প্রশিক্ষণ শেষে পোস্টিং-এর অপেক্ষায় আশা।
Read the full story in English