চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল। সব এক জায়গায় দেখতে হলে আসতে হবে মৎসমেলায়। শীতে রাজ্যজুড়ে হরেক রকম মেলা বসলেও মাছের মেলা বড় একটা শোনা যায় না। পয়লা মাঘ এই মৎস্যমেলা হয় ব্যান্ডেলের কেষ্টপুর গ্রামে। জায়গাটা কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর জন্মস্থান দেবানন্দপুরের অনতিদূরে।
কয়েক বিঘা জুড়ে এই মাছ মেলা দেখতে হাজার হাজার লোক সমাগম হয় মাঘের প্রথম দিনে। এবার মেলা পড়লো ৫১৬ বছরে। গ্রামবাংলার এই প্রাচীন মেলার পেছনে একটি সুন্দর গল্প আছে। এই গ্রামেই থাকতেন রঘুনাথ গোস্বামী। যিনি চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্যতম পারিষদ নিত্যানন্দর একনিষ্ঠ শিষ্য। শোনা যায় দীর্ঘদিন সন্ন্যাস নিয়ে তিনি নিরুদ্দেশ ছিলেন। এরপর হঠাৎ একদিন গ্রামে ফিরে আসাতে গ্রামবাসীরা রঘুনাথের বাবার কাছে আবদার করতে থাকেন। রঘুনাথ গ্রামে ফেরায় তাদের খাওয়াতে হবে। দিনটি ছিল পয়লা মাঘ।
গ্রামবাসীদের আবদার ছিল আম আর ইলিশ মাছ খাবেন। পাশের বাগান থেকে আম আর সরোবর থেকে ইলিশ মাছ তুলে সেদিন গ্রামবাসীদের খাওয়ানো হয়েছিল। মুখে আবদার হলেও আসলে গ্রামবাসীরা একটা পরীক্ষা নিতে চাইছিলেন। সত্যিই কী রঘুনাথের বাবা খাওয়াবেন?
শোনা যায় তারপর থেকেই প্রতিবছর ওই স্থানে আমবাগানে মাছের মেলা হয় পয়লা মাঘ। নামে মাছের মেলা হলেও মেলায় হরেকরকমের জিনিস মেলে। শুধু মাছ কেনা নয়, অনেকেই মাছ কিনে সেখানেই ভেজে খেতে বসে যান। অনেকে এই সময় ওই এলাকায় পিকনিকও করেন। প্রায় সমস্ত রকম মাছ এই মেলায় বিক্রি হয়। আশেপাশের জেলা থেকেও মাছ বেচতে আসেন বিক্রেতারা। সকাল থেকে সন্ধ্যা নামে- চলে মাছের বিকিকিনি, মৎসের নানা পদের খাওয়াদাওয়া।