বিজয়াতে বিষাদের সুর। বিজয়ার দিন জলপাইগুড়ির মাল নদীতে আচমকা হড়পা বানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ গিয়েছে ৪ মহিলা সহ ৮ জনের। নিখোঁজ এখনও কয়েক জন। শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। এই অবস্থায় একাদশীর সকালে টুইটবার্তায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের তরফে মৃত ও আহতদের আর্থিক সহায়তারও ঘোষণা করা হয়েছে।
একাধিক টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'দুর্গা বিসর্জন চলাকালীন জলপাইগুড়ির মাল নদীতে আকস্মিক হড়পা বানে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আমি প্রার্থনা করি যে তাঁদের পরিবার এই কঠিন সময়ে যেন লড়াইয়ের শক্তি পায়। তাঁদের সমবেদনা জানাই। ১৩ জন মাল এসএসএইচ-এ চিকিৎসাধীন, আমি তাদের দ্রুত আরোগ্যের কামনা করছি।'
'এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক এবং স্থানীয় যুবকদের প্রচেষ্টায় প্রায় ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি তাঁদের নিঃস্বার্থ সেবার প্রশংসা করি। এখন পর্যন্ত নিখোঁজদের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।'
মাল নদীতে হড়পা বান দুর্ঘটনায় 'মৃতের নিকটাত্মীয়কে ২ লক্ষ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে। যেকোনো সহায়তার জন্য অনুগ্রহ করে নিম্নলিখিত হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে যোগাযোগ করুন- 03561230780 / 9073936815। আসুন আমরা এই দুঃসময়ে একসঙ্গে দাঁড়াই।'
আগেই এই দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিযেছে, বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মাল নদীর ধারে আশেপাশে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। প্রত্যেকেই বিসর্জনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, 'হঠাৎ হড়পা বান হয়। বহু মানুষ ভেসে যায়। এখনও পর্যন্ত, আটটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও নদীতে আটকে পড়া কমপক্ষে ৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের দলগুলি।'
কিন্তু, এই দুর্ঘটনার পর বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠছে। ওই এলাকায় কেন সিভিল ডিফেন্সের পর্যাপ্ত বাহিনী ছিল না? কেন বোল্ডার ফেলে বিসর্জনের জন্য বাধ তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কে সেই অনুমতি দিয়েছিলেন? কীভাবে ১০ হাজার মানুষ বিসর্জনের সময় নদীর ধারে উপস্থিত হয়েছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অর্থাৎ নজরে প্রশাসনের ভূমিকা।