গঙ্গার দূষিত জল দিয়ে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন একটি হোটেলে তৈরি হচ্ছিল খাবার, এমনটাই অভিযোগ। খাদ্য সুরক্ষা দফতরের অভিযানে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তালা ঝোলানো হয়েছে ওই হোটেলটিতে। তবে শুধু খাদ্যে ভেজাল বা দূষিত পদার্থ মেশানোই নয়, নিয়ম না মেনে ব্যবসা করার অভিযোগে বেশ কয়েকটি হোটেলের মালিককে এর আগে সতর্কও করা হয়েছিল খাদ্য সুরক্ষা দফতরের তরফে। এরপরই সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রের খবরে হাওড়ার হোটেলটিতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। আর সেই অভিযান থেকেই সামনে আসে এই ভয়াবহ ঘটনা।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলিতে খাবার তৈরি করার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ আসে খাদ্য সুরক্ষা দফতরে। অভিযোগ পেতেই শুরু হয় তদন্ত। তদন্তে দেখা যায়, বেশিরভাগ হোটেলই বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতেই হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন একাধিক হোটেলে হানা দেয় খাদ্য সুরক্ষা দফতর। এই অভিযানকারী দলে ছিলেন হাওড়া পুরনিগমের স্বাস্থ্যদফতর, রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা দফতর, উপভোক্তা বিষয়ক দফতর, ডিস্ট্রিক্ট ইনডাস্ট্রিয়াল সেন্টারের আধিকারিকরা।
সম্প্রতি হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন গঙ্গার ধারের একাধিক হোটেলে অভিযান চালায় এই দলটি। দেখা যায়, অধিকাংশ হোটেলেরই ফুড লাইসেন্স নেই। বর্তমানে লাইসেন্সহীন হোটেলগুলির বিরুদ্ধে গ্রিন বেঞ্চে মামলা চলছে বলে খবর। এর পাশাপাশি হাওড়ার মাছবাজার সংলগ্ন বেশ কয়েকটি হোটেলেও অভিযান চালায় খাদ্য সুরক্ষা দফতরের এই দলটি। জানা যায়, সেখানেও হোটেলগুলি চলছে নিয়ম বহির্ভূতভাবেই। তবে প্রথমবারের জন্য তাঁদের কেবল সতর্কবার্তা দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- হাওড়া শহর থেকে উঠে যাচ্ছে ভ্যাট, দূষণ কমানোয় নয়া পদক্ষেপ পুরনিগমের
কিন্তু, কেন হঠাৎ করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন খাদ্য সুরক্ষা দফতর? এই প্রশ্নের উত্তরে জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া স্টেশনে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন এবং লাইসেন্সবিহীনভাবে ব্যবসার অভিযোগ আসছিল আমাদের কাছে। এইসব হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। এই অভিযোগ পেয়ে ৬টি দফতর মিলিতভাবে অভিযানে নামে। ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। যারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে হোটেল চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে"। অন্যদিকে, হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা বলেন, "পুরসভায় এতদিন ফুড সেফটি অফিসার ছিল না। এখন নিয়োগ করা হয়েছে। সেই জন্য বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাথায় রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এবার থেকে মাঝেমাঝেই এই ধরনের অভিযান করা হবে"।
হাওড়া জেলার আরও খবর পড়ুন, এখানে