উৎসবে লাগামছাড়া আনন্দ। মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, অনেকেরই মুখে ছিল না মাস্ক, দূরত্ববিধির দফারফা। পরিণতি, রাজ্যজুড়ে বাড়ছে সংক্রমণের দাপট। বিজয়া দশমীর দিন (১৫ অক্টোবর ২০২১) বাংলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫১ জন। এরপরের ৮ দিন দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এ রাজ্যে রোজ সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭৪ জনে। অর্থাৎ পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট যে, এক সপ্তাতেই আক্রান্তের সংখ্যাটা দ্বিগুণের বেশি।
ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার করোনা গ্রাফ। গত শুক্রবার কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪২ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ১১৬ জন। বাংলায় দৈনিক সংক্রমণের ঊর্ধবমুখী তালিকায় অবস্থায় করছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর। উত্তরবঙ্গের মধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে দার্জিলিং ও উত্তর দিনাজপুর।
বিশেষজ্ঞরা ভিষ্যদ্বাণী ছিল যে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই আসতে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। উৎসবের প্রথম পর্যায়ে সেই সেই আশঙ্কা সত্য হয়নি। তবে, স্বাস্থ্যবিধি ভুলে মানুষের বেপরোয়া হওয়াই কাল ডাকলো বলে অনুমান। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন। প্রথন বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো যাতে করোনা রোগীদের হাসপাতালে শয্যা পেতে কালঘাম না পোয়াতে হয় তার জন্য পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। প্রস্তুত রাখা রয়েছে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, হোম আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলিকে।
একনজরে বাংলার করোনা রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতাল-শয্যা-হোম আইসোলেশনের তথ্য তালাশ-
- স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র কোভিড রোগীর চিকিৎসার জন্যই রয়েছে ২০৩টি হাসপাতাল।
- এর মধ্যে ১৯৬টি সরকারি ও ৭টি বেসরকারি।
- কোভিড রোগীর জন্য শয্যা সংখ্যা রয়েছে ২৩,৯৪৭টি।
- বর্তমানে ২.৬৮ শতাংশ শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছেন।
- কোভিড রোগীর চিকিৎসায় মোট শয্যার মধ্যে আইসিইউ ও এইচডিইউ শয্যার সংখ্যা ২,৮৬১টি।
- গোটা বাংলাজুড়ে রয়েছে ২০০ সেফ-হোম। মোট শয্যা সংখ্যা ১১.৫০৭টি। এর মধ্যে ভর্তি রয়েছে প্রায় ২০০টি।
এদিকে, তিলোত্তমায় আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হতেই তড়িঘড়ি নিজেদের সেফ হোম ও কোয়ারেন্টিন সেন্টার চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্যাংরা চম্পামণি মাতৃ সদন সেফ ও হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন সেফ হোম খোলা হচ্ছে। এছাড়া তোপসিয়ার কোয়ারেন্টিন সেন্টারও চালুর করা হচ্ছে। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা বিবেচনা করে হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন সেফ হোমটি শিশু ও মায়েদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ডবল ডোজের আত্মবিশ্বাসে ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ! মাস্কহীন উল্লাসে সংক্রমণের হাইজাম্প
আরও পড়ুন- ফেরেনি হুঁশ, ‘রক্তচক্ষু’ ভিড়, তৃতীয় ঢেউ আতঙ্কে জেরবার চিকিৎসকমহল
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন