লক্ষ্য নারী সুরক্ষা ও শিশু শ্রম বন্ধের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। সেই লক্ষ্য পূরণেই হুগলির আরামবাগ থেকে সুদূর লাদাখের উদ্দেশে হেঁটে চলেছেন বাংলার যুবক প্রদীপ মণ্ডল। শনিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার মিরেপোতায় পৌঁছে প্রদীপ জানান, শীতে কষ্ট যাই হোক আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে লাদাখ পর্যন্ত তিনি যাবেনই। নিম্নবিত্ত পরিবারের সাধারণ একজন রেস্তোরাঁ কর্মী যুবকের এমন জেদ ও প্রয়াসের তারিফ বিশিষ্টদের।
অনেকেই বাইক নয়তো সাইকেলে দেশ ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েন। তাঁদের কেউ পরিবেশ সচেতনতা বা বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তার বার্তা দিয়ে চলেছেন বলে এমন খবর মাঝেমধ্যেই পাওয়া যায়। কিন্তু প্রদীপ মণ্ডলের হেঁটে লাদাখ পৌঁছনোর উদ্দেশ্যটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। আরামবাগের বাসিন্দা প্রদীপ সেখানকার নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করেন। শুক্রবার তিনি একা তাঁদের আসনপুরের বাড়ি থেকে রওনা দেন লাদাখের উদ্দেশে।
ওই দিন রাতটা নিরাপদ জায়গায় কাটিয়ে প্রদীপ শনিবার সকাল থেকে ফের পাঁয়ে হেঁটে রওনা দেন। বিকেলে তিনি পৌঁছেছেন পাশের জেলা পূর্ব বর্ধমানের রায়নার মিরেপোতায়। কোনও ক্লান্তির ছাপ তাঁর চোখে মুখে দেখা যায়নি। লাদাখ পৌঁছনোর ব্যাপারে সে যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সেটা তার কথাতেই এদিন ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন- গোটা রাজ্যেই ঠান্ডার আমেজ, কবে থেকে থিতু হবে শীত?
সংবাদমাধ্যমকে প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেটে গিয়েছে ৭৫ টা বছর। তবুও এখনও দেশের নারীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রদীপের মতে দেশে পুরুষরা যেভাবে সুরক্ষিত, সেভাবে মহিলারা কিন্তু সুরক্ষিত নন। সাধারণ মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন। এছাড়াও টাকা রোজগারের আশায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট ছোট শিশুদেরকে শ্রমিকের কাজে লাগানো হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শিশুদের ছেলেবেলা। ছোট শিশুর ছেলেবেলা যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, তারা যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানমুখী হয়ে উঠতে পারে তারই বার্তা সুদূর লাদাখ পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে চাই। আরামবাগ থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে লাদাখ পৌঁছোতে চাই।'' প্রদীপ জানিয়েছেন ৯০ দিনের মধ্যে তিনি লাদাখে পৌঁছে যেতে চান। তার জন্য এবং নিজের সুরক্ষার জন্য তিনি পুলিশ এবং প্রশাসনের থেকে অনুমতিও নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।