ধাওয়া করে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে ঘুমপাড়ানি গুলিতে শেষমেশ কাবু দস্যি হাতি। দাঁতালকে বাগে আনলেন বনকর্মীরা। বিরাট স্বস্তিতে স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার দিনভর হুগলির আরামবাগ ও গোঘাটে তাণ্ডব চালানোর পর ওই দিন বিকেলেই দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে আরামবাগ শহর এলাকায় ঢুকে পড়ে দাঁতালটি। বহু কষ্টে হাতিটিকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় হল্লা পার্টি। শেষমেশ রবিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহির উচালনে হাতিটিকে বাগে আনতে সক্ষম হন বনকর্মীরা।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল থেকেই আরামবাগ ও গোঘাটে তাণ্ডব চালায় দলমার একটি দাঁতাল হাতি। শনিবার বিকেলে হঠাৎই দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে আরামবাগ শহরে ঢুকে যায় দাঁতালটি। আরামবাগের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত সদরঘাট-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় দলমার দস্যি। বেশ কয়েকটি বাইক আছড়ে মাটিতে ফেলে সে।
শুধু তাই নয়, দাঁতালের হামলায় জখমও হয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গিয়েছে। প্রশাসন ও বনদফতরের তরফে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়। হাতির আতঙ্কে শনিবার আরামবাগ শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে হাতিটি গোঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়।
আরও পড়ুন- চাঁদা চেয়ে ভয়ঙ্কর জুলুম! রিসর্টে চড়াও তৃণমূল নেতার ‘বাহুবলী’ ভাই, তারপর?
রবিবার সকালে অবশেষে ওই দাঁতালকে বাগে এনেছেন বনকর্মীরা। রবিবার ভোরে দস্যি হাতি ঢুকে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহির উচালনে। হাতিটির পিছু ধাওয়া করে হুগলি ও বর্ধমানের আউসগ্রামের হল্লা পার্টি। সকালে উচালন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানোর পর শেষে দাঁতালটি উচালনের বুলচন্দ্রপুর দাসপাড়া এলাকায় ঢোকে। সেখানেই দুটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তারপর হাতিটিকে বাগে আনতে সক্ষম হন বনকর্মীরা। এই মুহূর্তে ওই এলাকার চাষের জমিতে আলু ও সর্ষে আছে। হাতি বাগে আসতেই স্বস্তির ছাপ এলাকার চাষিদের মুখেও।
বনসহায়ক সুমন ব্যানার্জী বলেন, 'শনিবার হাতিটি আরামবাগের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালীপুরে ছিল। হল্লাপার্টির তাড়া খেয়ে হাতিটি গোঘাট হয়ে ঢোকে উচালনে।' অন্যদিকে জেলা বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, 'আমরা হতিটি প্রথমে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু উচালনে ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে ২ রাউণ্ড ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে বাগে আনা হয়েছে। কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে সেই নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। উত্তরবঙ্গে নিয়ে যাওয়া হতে পারে দলছুট দাঁতালটিকে।'
আরও পড়ুন- খাস আদালতেই মিলল অত্যন্ত শক্তিশালী গ্রেনেড! তোলপাড়-কাণ্ডে ডাক পড়ল সেনার
স্থানীয় বাসিন্দা নরেশ বাউরী বলেন, 'আমরা খুব চিন্তায় ছিলাম। মাঠে যেভাবে হাতিটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল তাতে আলুর প্রচুর ক্ষতি হত। যাই হোক বনকর্মীরা হাতিটিকে বন্দী করায় আমরা এখন চিন্তামুক্ত।'