চোরাশিকার ঠেকাতে এবং পর্যটকদের সুরক্ষার দিকে নজর দিতে সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হল আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট। শীতের মরশুমে দেশ-বিদেশের পরিযায়ী পাখিদের ঢল এই আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে। আর এই সময় মূল্যবান পরিযায়ী পাখিদের ধরতে চোরাশিকারিদের উৎপাত বেড়ে যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই প্রথম গোটা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে অন্তত ২৫টি সিসি ক্যামেরা বসিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও শীতের মরশুমে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে। সেখানে থাকা হরিণ-সহ অন্যান্য পশুদের পর্যটকেরা যাতে নিজেদের আনা খাবার দিতে না পারেন সেদিকেও এই সিসি ক্যামেরা বসিয়েই নজরদারি চালানো হবে।
মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক জিজু জেসফার জোসেফ জানিয়েছেন, আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে চোরাশিকারিদের উৎপাত ঠেকাতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এরই পাশাপাশি গোটা ডিয়ার ফরেস্টে পর্যটকদের গতিবিধির উপরেও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেই নজরদারি চালানো হবে।
উল্লেখ্য, মালদহের গাজোল ব্লকের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কয়েক একর জমির ওপর রয়েছে আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট। বর্তমানে এই ডিয়ার ফরেস্টে ৬০টি'রও বেশি চিতল-সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রজাতির হরিণ রয়েছে। এছাড়াও নীলগাই, খরগোশ সহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণীও রয়েছে এই ডিয়ার ফরেস্টে। প্রতি বছর শীতের মরশুমে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পরিযায়ী পাখির দল ভিড় জমায়।
আরও পড়ুন- Premium: বারুইপুরের অহঙ্কার পেয়ারা! হাজার-হাজার পরিবারের আয়ের দিশা এই চাষে
এছাড়াও আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে কয়েক বিঘা জমির ওপর রয়েছে একটি বিশাল বিল। সেখানেও বিভিন্ন ধরনের পাখির দল মাছ ধরতে আসে। আর এই সব পরিযায়ী পাখিদের ধরতেই তৎপর হয়ে উঠেছে চোরাশিকারিদের দল। পরিযায়ী পাখি ধরার পর সেগুলি খোলা বাজারে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ।
আদিনা ডিয়ার পার্কে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট সংলগ্ন খাল-বিলে এখন পরিযায়ী পাখিদের ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চোরাশিকারিরা। সেই পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখেই বনদফতর গোটা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। শীতের মরশুমে আদিনা ডিয়ার ফরেস্টের আশেপাশে প্রতিদিনই পিকনিকের আসর বসতে শুরু করেছে।
এই ভিড়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কখনও চোরাশিকারিদের দল অপরাধমূলক কাজ করার চেষ্টা চালায়। এছাড়াও পর্যটকেরা আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে ঢোকার পর সেখানে থাকা খাঁচাবন্দি বন্যপ্রাণীদের নিজেদের আনা খাবার দেন। অনেক সময়েই বাইরের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে পশুরা। তাই এই বিষয়টিতে নজরদারি রাখতে সচেষ্ট বনদফতর।
আরও পড়ুন- এবার ঠান্ডার ঝোড়ো ব্যাটিং দেখবে বাংলা! সোমবারের মধ্যেই কতটা নামতে পারে পারদ?
মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক জিজু জেসফার জোসেফ জানিয়েছেন, শুধু বন্যপ্রাণী নয়, পর্যটকদের সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখেও আদিনা ডিয়ার ফরেস্টে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেটি নির্দিষ্ট একটি অফিস রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই ডিয়ার ফরেস্টের আশেপাশে কোথাও যাতে চোরাশিকারির দল যাতে অপকর্ম না করতে পারে, সেদিকেও বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে।