রাতের হাওড়া শহরে নিরাপদ নন হাওড়াবাসী। এমন অভিযোগ করলেন হাওড়া নিবাসী জাতীয় স্তরের প্রাক্তন বক্সার অমিত কুমার সামন্ত (৬৫)। মদ্যপ কিছু যুবকের কার্যকলাপের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিজেই হেনস্থার শিকার হলেন অমিতবাবু এবং তাঁর পুত্র অরিন্দম সামন্ত। এমন কী আত্মরক্ষার খাতিরে শূন্যে গুলি চালিয়ে বিপাকে পড়েন এই প্রাক্তন বক্সার তথা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী।
ঠিক কী হয়েছিল?
ঘটনাটি ঘটেছে রাজ্যের মুখ্য সচিবালয় নবান্ন থেকে ঢিলছোড়া দুরত্বে অবস্থিত হাওড়ার শিবপুর থানা এলাকার ওঙ্কারমল জাঠিয়া রোডে। রাতে পোষ্যকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন গৃহকর্তা অমিতবাবু। বাড়ি থেকে বেরিয়েই দেখেন, বাড়ির কাছেই টোটোয় বসে মদ্যপানে মগ্ন চার যুবক। এহেন দৃশ্য দেখে প্রতিবাদে গর্জে উঠলে হেনস্থার শিকার হতে হয় তাঁকে, এমনই অভিযোগ প্রাক্তন বক্সারের।
অমিতবাবুর দাবি, দুষ্কৃতীরা মদের বোতল ভেঙে তাঁর ছেলে অরিন্দমের পেটে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পর্যন্ত করে। ছেলেকে বাঁচাতে এবং নিজের আত্মরক্ষার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শূন্যে গুলি ছোড়েন অমিতবাবু, এমনটাই জানা গেছে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, পুলিশে খবর দিলেও প্রায় ঘন্টাখানেক পর ঘটনাস্থলে আসে শিবপুর থানার পুলিশ। বুধবার এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মার দ্বারস্থ হন সামন্ত পরিবার।
আরও পড়ুন- গঙ্গার ‘দূষিত জলে’ তৈরি হচ্ছে খাবার, তালা ঝুলল হাওড়ার একাধিক হোটেলে
কেন এই আচমকা হামলার মুখে পড়তে হল অমিতবাবুর মতো বর্ষীয়ান নাগরিককে? এই প্রশ্নের উত্তরে অমিতবাবু বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় অসামাজিক কাজ চলছে। রাতে পোষ্যকে নিয়ে বাইরে বেরোই। সেই সময় বাড়ির কাছেই চারজন যুবক টোটোয় বসে মদ্যপান করছিল। তা দেখে প্রতিবাদ করি। তখন সেই মদ্যপ যুবকেরা এসে হামলা করে।" অমিতবাবুর কথায়, তাঁর চিৎকারে ছেলে অরিন্দম ঘর থেকে বেরিয়ে এসে অমিতবাবুকে উদ্ধার করতে গেলে দুষ্কৃতীরা বোতল ভেঙে ছেলের পেটে ঢুকিয়ে দিতে যায়। নিজেদের আত্মরক্ষার জন্যই নিজের লাইন্সেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি ছোড়েন তিনি।
আরও পড়ুন- ২০০ বছরের পুরানো ছাপাখানার খোঁজ মিলল হাওড়ায়
অমিতবাবুর অভিযোগ, গুলির আওয়াজে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়। কিন্তু তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। এমন কী তাঁকে প্রাণে মারার হুমকিও দেয়। এরপর পুলিশে অভিযোগ জানানোর প্রায় ঘন্টাখানেক পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সোমবার শিবপুর থানায় অভিযোগ জানান সামন্ত পরিবার। রবিবারের ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্ত অমিতবাবু বলেন, "২১ বছর এখানে আছি। যতদিন নবান্ন ছিল না ততদিনই যেন ভালো ছিলাম। এখন এলাকায় দুষ্কৃতীরা অত্যাচার চালাচ্ছে"।