প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের কড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীকিক একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে সংক্রমণ কমার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। বুদ্ধবাবুর সিটি স্ক্যান রিপোর্টও ইতিবাচক বলেই জানা গিয়েছে।
বাড়িতে থাকাকালীনই ফের এক দফায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাইল্যাটারাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর শ্বাসনালী ও ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। হাসপাতালে আনার পর থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় যাবতীয় তৎপরতা নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রক্ত পরীক্ষার যে রিপোর্ট এসেছে তাতে সংক্রমণ কমার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। নতুন করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বুকে জল জমার মতো আশঙ্কাও নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। বুদ্ধবাবুর সিটি স্ক্যানের যে রিপোর্ট এসেছে সেটাও সন্তোষজনক বলেই মত চিকিৎসকদের। তাঁর ক্রিয়েটিনিন রিপোর্টও স্বাভাবিক। সংক্রমণ কমাতে প্রথম অবস্থায় কড়া ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন- কালীঘাটের কাকুর ‘গুণ’-এর শেষ নেই! দুর্নীতি ঢাকতে ‘যা ইচ্ছে’ তাই করেছেন!
হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তবে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্চেন বু্দ্ধবাবু। আগের চেয়ে তাঁর শারীরিক পরিস্থতিরও উন্নতি হয়েছে। সেই কারণেই এবার তাঁকে স্বাভাবিক পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার ভাবনা চিকিৎসকদের। একইসঙ্গে ধীরে ধীরে তাঁর ভেন্টিলেশন নির্ভরতা কমানোরও ভাবনা রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। সব রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যালোচনায় ফের বৈঠকে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা।
আরও পড়ুন- বিরাট ধাক্কা অভিষেকের! তৃণমূল সাংসদের মুখ পুড়িয়ে কঠিন নির্দেশ হাইকোর্টের
অন্যদিকে, এদিন হাসপাতালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতারা। মহম্মদ সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্ররা এদিন ফের একবার দেখা করেন বুদ্ধবাবুর সঙ্গে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এদিন সেলিম বলেন, ''আগের চেয়ে উনি ভালো আছেন। আশা করছি আগামী দু'একদিনের মধ্যে আরও কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি। উনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। ওঁর জন্য গোটা দেশ তথা গোটা রাজ্য উদ্বিগ্ন। তাঁকে সুস্থ করতে চিকিৎসকরাও সব রকম চেষ্টা করছেন।'
বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, 'বাংলার রাজনীতিতে তাঁর একটা বিরাট জায়গা আছে। আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন তিনি, এই প্রার্থনাই করি।' প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, 'বুদ্ধবাবুর সততা তুলনাহীন। ওঁর পথা চলা প্রতিটি রাজনীতিবিদের কাছেই একটা আদর্শের মতো। তাঁর ভাবনার মধ্যে বাংলার উন্নয়নের প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি। সিঙ্গুর হলে বাংলার তো ভালোই হতো। সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করি, বুদ্ধবাবু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।'