Abhijit Ganguly On SSC Recruitment Scam Case Verdict: বিচারপতি আসন ছেড়ে তিনি এখন রাজনীতিক। কিন্তু বিচারপতি থাকাকালীন তাঁর নির্দেশেই এসএসসি দুর্নীতির তদন্তভার গিয়েছিল সিবিআইয়ের হাতে। তারপর একে একে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে সংস্থার বড়কর্তারা প্রায় সকলেই শ্রীঘরে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৩ হাজারের কিছু বেশির চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। এরপরই মুখ খুললেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'মিথ্যাচারী' বলে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন। মামলা চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে একাধিকবার নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে রাজ্যকে। তখন তাঁকে কটাক্ষের বাণ বইয়ে দিয়েছিল শাসক দলের নেতৃত্ব। এমনকী বিচারপতি কুর্সি ছেড়ে রাজনীতিতে নাম লেখানোরও চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া হয়েছিল। বিজেপিতে নাম লিখিয়ে যা গ্রহণ করেছেন অবিজিৎবাবু। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এ দিন প্রাক্তন বিচারপতির পাল্টা চ্যালেঞ্জ, তাঁকে যাঁরা রাজনীতিতে নাম লেখানো জন্য বলেছিলেন আজ তাঁরা পদত্যাগ করুন।
তমলুকে বসে সোমবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি বেশ কিছুদিন এই বিচারবিভাগের অঙ্গ হিসাবে কাজ করেছিলাম। যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তাঁদের ঠকিয়েছেন এই মিথ্যাচারী নির্লজ্জ মুখ্যমন্ত্রী। বঞ্চিতদের তালিকায় হিন্দু, মুসলমান সকলে আছেন। সকলের উচিত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কে বয়কট করা। আমি বর্গভীমা মন্দির অবধি পদযাত্রা করে যোগ্য প্রার্থীরা যাতে চাকরি পান, তার প্রার্থনা করব।'
আরও পড়ুন- SSC: অযোগ্যদের চাকরি বাতিল, এবার ঘুরবে ভাগ্যের চাকা? কী বলছেন আন্দোলনের অন্যতম মুখ শহীদুল্লাহ?
অভিজিৎবাবুর চ্যালেঞ্জ, 'এই দুর্নীতির সঙ্গে তৃণমূলের মাথারা জড়িত। আমাকে প্রায়ই বলতেন পদত্যাগ করে রাজনীতিতে আসুন। আমি তো চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করেছি। এবার যদি লজ্জা থাকে তবে ওঁরা পদত্যাগ করন। কেন পদ আঁকড়ে থাকবে জোচ্চোররা? আসলে পদে থেকে সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে থাকলে চাইছেন। কিন্তু নিষ্কৃতি মিলবে না।'
এই মামলা প্রথম শুনেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।তিনিই ৮,১৬১টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চেও সেই নির্দেশ বহাল রাখে। পরে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে গেলে এসএসসি মামলা আবার ফেরানো হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। মে মাসের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সাড়ে তিন মাসেই সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ২০ মার্চ বিচার শেষে রায় স্থগিত রেখেছিল আদালত। সোমবার সেই রায়ই ঘোষণা করা হল।
আরও পড়ুন- SSC মামলার ঐতিহাসিক রায়দান হাইকোর্টের, ভোটের আবহে চূড়ান্ত ধাক্কা রাজ্যের!
এসএসসি নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে কী স্বস্তিতে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ? তমলুকের বিজেপি প্রার্থীর কথায়, 'আজ স্বস্তির দিন নয়। জোচ্চিরি আদালতের কাছে ধরা পড়েছে। আমার হাত দিয়েই সেই কাজ শুরু হয়েছিল। আদালত ন্যায্য বিচার করে, অত্যন্ত ঠিক রায় হয়েছে। সব জোচ্চোরগুলোকে ফাঁসিতে চড়ানো উচিত।'
হাইকোর্টের এ দিনের নির্দেশ, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। এই আবহে ২৩ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করে উচ্চ আদালত। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশের ২০১৬ প্যানেল বাতিল হল। চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দিতে হবে।