চরম নৃসংশতার শিকার হল সাড়ে চার বছরের এক শিশু। ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলাদেশ সীমান্তের জেলা মুর্শিদাবাদ। সামান্য সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে কাকা-ভাইপোর মধ্যে বিবাদের জেরে শেষ পর্যন্ত কাকার ছেলেকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলে খুন করার অভিযোগ উঠল গুণধর ভাইপোর বিরুদ্ধে। মৃত শিশুর নাম ইমরাজ হাসান। বুধবার সন্ধ্যায় ফারাক্কার নতুন মালঞ্চ ফিডার ক্যানেল ঘাটে ভেসে ওঠে তার মৃতদেহও। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
এই ব্যাপারে থানার আইসি উদয় শঙ্কর ঘোষ বলেন,"লিখিত অভিযোগ পেয়েই পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে মূল অভিযুক্তকেও ফারাক্কা থেকে গ্রেপ্তার করেছে"। ধৃত আব্দুর রহমানকে বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে ৩ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন, মাকে মিষ্টি খাওয়ানোয় বাবাকে পেটাল ছেলে, সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও; অবশেষে গ্রেফতার ছেলে
স্থানীয় সূত্রে ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পেশায় ঠিকা শ্রমিক ফারাক্কার মহাদেবনগরের সামাউল্লা শেখের সঙ্গে তার খুড়তুতো ভাইয়ের ছেলে আব্দুর রহমানের বসত বাড়ী সংক্রান্ত জমি জমা ভাগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। অভিযোগ,কয়েকদিন আগেই উভয়ের মধ্যে চরম অশান্তি ঝামেলা হয়। যা সালিশিসভা পর্যন্ত গড়িয়েও সমাধান হয়নি। মঙ্গলবার বাড়ির পাশেই সাইকেল নিয়ে খেলায় মত্ত ছিল সামাউল্লার ছোট ছেলে ইমরাজ। তখনই সুযোগ বুঝে আব্দুর তাকে সঙ্গে নিয়ে আকুরা পুল হয়ে মালঞ্চ ঘাটের কাছাকাছি দিয়ে ফিডার ক্যানেলের পূর্ব প্রান্তে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখানেই ইমরাজকে প্রথমে খুন করে মৃতদেহ লোপাটের জন্য শিশুর দেহ গঙ্গার জলে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এদিকে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না মেলায় মঙ্গলবার ইমরাজের বাবা পাড়ার পঞ্চায়েত প্রধান আবদুল বারিক শেখ সহ আরও কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আব্দুরের বাড়িতে হাজির হন বুধবার বিকেলে। তখনই সকলের সামনে চাপে পড়ে আব্দুর খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। সঙ্গে জানায় ইমরাজকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার কথাও।তড়িঘড়ি মালঞ্চ ফিডার ঘাটে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। সে সময়েই ভেসে ওঠে ছোট্ট ইমরাজের দেহ।এরপরে পুলিশ লিখিত অভিযোগ পেয়ে আব্দুরের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। ফারাক্কা থেকে পালিয়ে যাওয়ার আগেই পুলিশের জালে গ্রেপ্তার হয় আব্দুর রহমান।
এই ব্যাপারে মৃত শিশুর বাবা সমাউল্লা শেখ ছেলের দেহ আঁকড়ে বলেন, " ফাঁসির চেয়েও যদি কোন কঠিন শাস্তি থেকে থাকে তাহলে এই খুনের জন্য আব্দুরের যেন সেই শাস্তিই হয়, এমনটাই প্রার্থনাই করছি ওপরওয়ালার কাছে"।