পশ্চিমবঙ্গে গত ১০ দিনে চার বিচারাধীনের মৃত্যু হয়েছে। নিকটাত্মীয়দের অভিযোগ, জেলে নিপীড়নের জন্যই প্রাণ হারিয়েছে ওই চার বিচারাধীন। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে পৃথক মামলায় এই চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে গত ২৮ জুলাই জিয়াউল নস্কর (৪০) তার স্ত্রী মাহরুফা বিবির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল। ফোনে জিয়াউল জানিয়েছিল, তিনি মাহরুফাকে পরদিন ফোন করবেন। কিন্তু পরের পাঁচ দিন স্বামীর থেকে কোনও ফোন পাননি মাহরুফা। এরপর গত ২ আগস্ট জিয়াউলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় জেল কর্তৃপক্ষ।
জিয়াউলের ঘটনাই এই ধরনের একমাত্র ঘটনা নয়। ১০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে, আরও তিন জন বিচারাধান— কুরালির আবদুল রজক দেওয়ান, ফকিরপাড়ার আকবর খান ওরফে খোকন খান এবং একই জেলার সন্তোষপুরের সাইদুল মুন্সি— বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে মারা গিয়েছে। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে পৃথক মামলায় জিয়াউল ছাড়া এই তিন জনকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের পরিবারের অভিযোগ, সংশোধনাগারে নির্যাতনের ফলে ওই চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন- লকডাউন আর ঘূর্ণিঝড় কেড়েছিল স্কুল, শিক্ষাঙ্গনে পড়ুয়াদের ফেরাচ্ছে ‘পঞ্চায়েতের পাঠশালা’
বাকি তিন বন্দির পরিবারের মত জিয়াউলের স্ত্রী মাহরুফা বিবিও (৩৫) তাঁর স্বামীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে মেনে নিতে পারছেন না। ঘুটিয়ারি শরিফের বাড়িতে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, মাহরুফা অভিযোগ করেন, 'আমার স্বামী আমাকে বলেছেন যে তাঁকে থানায় এবং জেলে নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাই আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে।'
জিয়াউলের স্ত্রী এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করতেই দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমিত গুপ্তা প্রতিটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, মৃতের নিকটতম আত্মীয়কে সরকারি চাকরি এবং এই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
Read full story in English