স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। সিবিআই জেরার মুখোমুখি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সিবিআই তলব পেয়েও উধাও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী ও তাঁর কন্যা। অঙ্কিতার নিয়োগ ঘিরেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্তের ভার পেয়েছে কেন্দ্রীয় গোন্দা সংস্থা। এসবের মধ্যেই বুধবার প্রকাশ্যে এল প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ। গায়েব ৮৩ লক্ষ টাকা। কাঠগড়ায় পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ঝিলু ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ হেকমত আলি।
ধৃতের বাড়ি মঙ্গলকোটের নওয়াপড়ায়। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত তৃণমূল উপপ্রধানকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উপপ্রধানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ,বীরভূমের কীর্ণাহার থানার সরডাঙা গ্রামে বসবাস করেন মহম্মদ বদরুদোজ্জা।প্র তারণার বিষয়ে মঙ্গলবার তিনি মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বদরুদোজ্জার অভিযোগ, ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর উপপ্রধান শেখ হেকমত আলির মেয়ের সঙ্গে তাঁর ছেলে মহম্মদ গোলাম জামিমের বিয়ে হয়। তারপরে হেকমত আলি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জামিম কে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক দফায় মোটা টাকা নেয়। কিন্তু টাকা নিলেও চাকরি কোনও ব্যবস্থা হয়নি। টাকা ফেরৎ চাইলেও সেটাও দেয়নি হেকমত।
প্রাতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে মহম্মদ বদরুদোজ্জা মঙ্গলবার মঙ্গলকোট থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপপ্রধান হেকমত আলি ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১২ জনের কাছ থেকে প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এরপরই মঙ্গলকোটের ঝিলু ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ হেকমত আলিকে গ্রেফতার করে।
এই প্রতারণার বিষয়ে মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরির সাফ জবাব, 'প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করছে।' জেলা বিজেপি নেতারা যদিও এই প্রতারণার বিষয়টিকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়েনি। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'প্রতারণা , কাটমানি আদায় , তোলাবাজি এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীদের মূল ভিত্তি। এই ব্যাপারে তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা নিজের আত্মীয় পরিজনকও রেহাই দেন না। পুলিশ তৃণমূলের প্রতারক উপপ্রধানের দৃষ্টান্তমূল শাস্তির ব্যবস্থা না করলে বিজেপি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।'