হাওড়ায় 'অপারেশন কোভিড জিরো'। জেলায় করোনা নির্মূল করতেই আজ, সোমবার থেকে হাওড়ার জেলার চারটি থানা এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন বলবৎ হল। এর ফলে খাদ্যসামগ্রী হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখার ক্ষেত্রেও চরম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, বন্ধ থাকা হাওড়া জেলা হাসপাতালও ধাপে ধাপে খুলতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে হাওড়া জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশ পার হয়েছে। ফের রবিবার দুপুরে হাওড়া পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। তাঁরা এদিন মালিপাঁচঘড়া, গোলাবাড়ি থানার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। গোলাবাড়ি থানা হয়ে সালকিয়া স্কুল রোড, বাঁধাঘাট, ফুলতলা ঘাট, শ্রীরাম ঢ্যাং রোড, সালকিয়া চৌরাস্তা, পিলখানা, অবনী দত্ত রোড প্রমুখ এলাকা গাড়ি নিয়ে ঘুরে দেখেন। লকডাউন পরিস্থিতি কতটা মেনে চলা হচ্ছে তাই মূলত খতিয়ে দেখা হয়।
'অপারেশন কোভিড জিরো' কার্যকরী করতে রীতিমত তৎপর হাওড়া পুলিশ-প্রশাসন। কোনও ভাবে সংক্রমণ যাতে আর না ছড়িয়ে পরে সে জন্য সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাওড়ার করোনা পরিস্থিতির বেহাল দশা শোধরাতে তাই একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে প্রশাসন। একটু সুযোগ পেলেই নানা অজুহাতে মানুষ বাইরে বেরিয়ে পড়ছে। দোকান-বাজার খুললেই ভিড় জমে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। তাই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাওড়া, শিবপুর, গোলাবাড়ি ও মালিপাঁচঘড়া এই চার থানা এলাকাকে সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাওড়ার ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায়। তিনি বলেন, "এই এলাকাগুলিতে একমাত্র ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। আর খাদ্যদ্রব্য-সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। যে সব ওষুধের ক্ষেত্রে প্রেসক্রিপশন লাগে কেবল সেগুলি কিনতেই দোকানে যাওয়া যাবে। এলাকায় হোম ডেলিভারির জন্যে স্থানীয় ক্লাব থেকে স্বেচ্ছাসেবক চাওয়া হয়েছে"।
অন্যদিকে এক সপ্তাহের ধরে বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকেই খুলছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল। হাওড়া জেলা হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান, শনিবার থেকেই ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগকে জীবানুমুক্ত করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ চালু হবে ফিভার ক্লিনিক। প্রতি দিন ২জন করে চিকিৎসক রোগী দেখবেন। তিনি জানান, ধাপে ধাপে এই হাসপাতালের সমস্ত বিভাগই চালু করা হবে। সারা হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করার জন্যই মূলত হাসপাতাল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তা না হলে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল। জানা গিয়েছে, আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে প্রসূতি বিভাগ, নবজাতক বিভাগ, শিশু বিভাগ এবং জরুরি বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিন সিটি পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয় এক আসন্নপ্রসবা গৃহবধূকে। ওই পরিবারের এক নাবালক ফোন করে বিষয়টি জানালে 'কিরণ' অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই মহিলাকে তাঁর শালিমার কোলডিপোর বাড়ি থেকে লিপি হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানান সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক। তিনি আরও জানান, এদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং করে ২২টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। কাজিপাড়া, সালকিয়া, পিলখানা, টিকিয়াপাড়া প্রভৃতি এলাকায় রূটমার্চ করেছে পুলিশ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন