Suvendu Adhikari on Gangasagar vessel services fair Increase: গঙ্গাসাগরের পূন্য়ার্থীদের কার্যত 'লুঠ' করেছে মমতা সরকার। বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে গঙ্গাসাগরের ভেসেল খরচের ভাড়া বৃদ্ধির হিসাব ফাঁস করে সোচ্চার হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গঙ্গাসাগরগামী ভেসেল ও নৌকোয় ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে ৩৪৪ গুণ!
বিরোধী দলনেতার দাবি 'মিথ্যাচার' বলে তোপ দেগেছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, ২০১৮ সাল থেকে সাগরগামী পূর্ণ্যার্থীদের ভেসেলের ভাড়া একই আছে। পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারী ভাড়া বাড়িয়েছিলেন। উল্টে পরে কচুবেড়িয়া থেকে ৮ নম্বর লটের ভাড়া ৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে।
কী দাবি শুভেন্দুর?
এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, গঙ্গাসাগর মেলার সময় স্বাভাবিক বা অন্য সময়ের ভাড়ার তুলনায় ভেসেল বা নৌকার ভাড়া কয়েক গুণ করে বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। বিরোধী দলনেতার দাবি, মেলায় সময়কাল গঙ্গাসাগর থেকে বেণুবনের ভেসের খরচ ৪০ টাকা থেকে জনপ্রতি ৮৫ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ একলাফে বেড়েছে ৪৫ টাকা। যা শতাংশের বিচারে ১১২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি।
অন্যদিকে কচুবেড়িয়া থেকে ৮ নম্বর লটে ভাড়া ৯ টাকা ছিল। যা মেলার সময় ৪০ টাকা নেওয়া হয়েছে মাথাপিছু। এক লাফে ৩১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শতাংশের বিচারে যা সেটাই বেড়েছে ৩৪৪% গুণ।
এই দুই রুটে মেলার সময় ভেসেলে ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে ৭৬ টাকা। যা শতাংশের নিরিখে ৩৪৪ গুণ!
আরও পড়ুন- ISF: আইএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের, মিলল ধর্মতলায় নৌশাদদের ২১শের সভার অনুমতি?
শুভেন্দু অধিকারির দাবি, অনুমান করা যেতে পারে যে- এই দুই রুটে নূন্যতম ৫০ লাখ পূর্ণ্যার্থী যাতায়াত করেছেন। অর্থাৎ বর্ধিত ৭৬ টাকা হিসাবে রাজ্যের কোষাগারে এসেছে ৩৮ কোটি টাকা।
এক্স হ্যান্ডেলে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, 'দেউলিয়া পশ্চিবঙ্গ সরকার মোটা টাকা লাভের জন্য সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে। প্রতিদিন বড় বড় দাবি করা হচ্ছে যে বাংলার সরকার গঙ্গাসাগর মেলায় পূর্ণ্যার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করছে এবং কীভাবে সেই আর্থিক বোঝা বহন করছে রাজ্য সরকার। সেই দাবি অবশ্য বাস্তব পরিস্থিতি থেকে ভিন্ন। আসলে মমতা সরকার গঙ্গাসাগর মেলাকে তাদের শূন্য কোষাগার পূরণ করতে ব্যবহার করছে। গঙ্গাসাগর মেলায় আসা ভক্তদের স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে বহুগুণ বেশি ভেসেল ভাড়া দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। দয়া করে দেখুন কিভাবে ভক্তদের কাছ থেকে অর্থ তোলা হচ্ছে যাদের কোন উপায় নেই কারণ তাঁরা পবিত্র আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দূর থেকে এসেছেন।' নিজের পোস্টের সঙ্গে একটি ভেসেল ভাড়ার তুলনামূলক তালিকাও দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
এরপরই শুভেন্দুর তোপ, 'এভাবে টাকা তোলা এই দেউলিয়া রাজ্য সরকারের নিয়মিত পদ্ধতি ও অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এর আগেও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত টেটপরীক্ষার ফর্মের খরচ ২০২২য়ের তুলনায় বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০২২ সালে যে ফর্মের দাম ছিল ১০০ টাকা তা ২০২৩ সালে হয় ৫০০ টাকা। যা ৪০০ গুণ বৃদ্ধি। এবার টেট পরীক্ষা দিয়েছিল ৩,০৯,০৫৪ জন পড়ুয়া। ফলে বর্ধিত ফর্মের অর্থের মাধ্যমে মমতা সরকার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ১৫ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা তুলেছে। যদিও এটা স্পষ্ট করা হয়েছিল যে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরিচালিত পরীক্ষার বাস্তবে নিয়োগের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই এবং এটি নিছক একটি বার্ষিক অনুশীলন!'
রাজ্য সরকারের তোপ-
বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে তৃণমূলের তরফে জানানো হয় যে, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকার কার্যকরভাবে ২০২৪ সালের গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা করেছে, ১.১ কোটি তীর্থযাত্রী এবং পর্যটকদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করেছে। তা সত্ত্বেও শুভেন্দু অধিকারী ভেসেলের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পর্কে মিথ্যা দাবি করছেন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০১৮ সাল থেকে ভাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে। বিজেপি যত খুশি মিথ্যা ছড়াতে পারে কিন্তু মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মেলায় মানুষের নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ!'
বিরোধী দলনেতার দাবি'কে 'বিলম্বিত বোধদয় এবং দ্বিচারিতা' বলে কটাক্ষ করেছেন আধিকার আন্দোলনের কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী। সোশাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'বিরোধী দলনেতার বিলম্বিত বোধদয় এবং দ্বিচারিতা | মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার ঠিক পরেই এই প্রশ্ন তোলার অর্থ কি?? স্রেফ অজ্ঞতা, অপদার্থতা, চালাকি এবং ভাওতাবাজির পরিচয় দেওয়া | তাছাড়া এই ভাড়া বহু বছর ধরেই কমবেশী একই রয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী পরিবহনমন্ত্রী থাকাকালীন সময়।'