দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের ছায়া এবারে উত্তরবঙ্গে। জমি বিবাদের জেরে অদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলায়। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির মাগুরমারি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরঞ্জনপাট এলাকায়। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ ওই মহিলা বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ। ধৃতদের নাম রাতনু মুণ্ডা ও পরিমল রায়। রাতনু ওই মহিলার আত্মীয় বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের সোমবারই আদালতে তোলার কথা। জলপাইগুড়ির ডিএসপি (গ্রামীণ) ডেন্ডুপ শেরপার নেতৃত্বে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশকে দেওয়া মহিলার বয়ান অনুযায়ী, মূল ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাতে। মহিলা বাড়িতে একা থাকার সু্যোগে দুই অভিযুক্ত মহিলাকে তুলে নিয়ে যায় স্থানীয় গিলান্ডি নদীর পাড়ে। সেখানেই রাতনু ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এরপর রাতনুই মহিলার যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী মহিলাকে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ৪ সেনাকর্মী
এরপরেই অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ওই অবস্থাতেই সারা রাত পড়ে ছিলেন মহিলা। রবিবার সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর পরিবারের লোকজনকে খবর দেন। খবর পাওয়ার পর মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালেও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় দ্রুত চিকিৎসকেরা ওই মহিলাকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে রেফার করে দেন।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়েই ডিএসপি গ্রামীণের নেতৃত্বে পুলিশর একটি দল হাসপাতালে পৌঁছয়। হাসপাতালের মহিলা কর্মীদের সামনেই পুলিশ মহিলার বয়ান রেকর্ড করে। এরপর মহিলা পুলিশদের সঙ্গে দিয়ে নিগৃহীতাকে পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে৷ মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে অভিযানে নেমে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফোন রেখে গাড়ি চালাতে বলায় ধর্ষণের হুমকি জুটল শহরের গায়িকার
মহিলার স্বামীর অভিযোগ, পারিবারিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাতনু ঝামেলা করছিল। এর আগেও সে বেশ কয়েকবার ঝামেলা করে। রবিবার জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি ও ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায় নির্যাতিতাকে দেখতে যান। ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, "মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।" নির্যাতিতা জানিয়েছেন, "জমি নিয়ে ঝামেলা চলছিল। শনিবার রাতে আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতনু ও তার সঙ্গীরা নদীর ধারে ধর্ষণ করে। রাতনু গোপনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয়।" দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।