Garden Reach Building Collapse Death: 'পরিযায়ী শ্রমিক ছিল ভালো ছিল। কেন যে এখানে ফিরে এলো?' চাপা কান্নার মধ্যে থেকে মাঝে মধ্যেই শোনা যাচ্ছে এই কথা। খানাকুলের পাতুল গ্রাম এখন শোকে আচ্ছন্ন।
পাড়ার হাসিখুশি ছেলেটি আর নেই! সোমবারই খবর এসেছে গার্ডেনরিচের মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে খানাকুলের ১৮ বছরের তরতাজা ছেলে শেখ আবদুল্লা মল্লিক। প্রতিবেশী রাজ্যে সোনার কাজ করত আবদুল্লা। কিন্তু লকডাউনের সময় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে বাড়ি ফিরে আসে। অন্য কোনও কাজ না পেয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল আবদুল্লা। গত ২২দিন আগে এক বন্ধুর সঙ্গে গার্ডেনরিচের অভিশপ্ত নির্মীয়মান বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজে ঢুকেছিল সে। ২২ দিন ধরে ওখানেই ছিল। দুর্ঘটনা ঘটার সময় ওই বাড়িতেই থাকায় ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে যায়। পরে উদ্ধার করে এসএস কে এম হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই সোমবার তার মৃত্যু হয়।
আর এই খবর আসা মাত্রই পাতুলে শোকের ছায়া নেমে আসে। আবদুল্লার আত্নীয়দের কাছ থেকে জানা যায় যে আবদুল্লার ছোটবেলা খুব করুণ অবস্থার মধ্যে কেটেছে। শৈশবে তার বাবা মার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বাবা মা উভয়েই অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। আবদুল্লাকে তার নানি অর্থাৎ দিদিমা নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই থেকে মামার বাড়িতেই মানুষ আবদুল্লা। নাতির মৃত্যুর খবর আসতেই শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন দিদিমা মাসুরা বেগম।
আরও পড়ুন- KMC: শহরজুড়ে বেআইনি বহুতল, বার বার দায় এড়াচ্ছেন মেয়র ফিরহাদ! ফের কী যুক্তি?
বৃদ্ধা মলসুরার চোখের জল গাল বেয়ে নামছিল। কাঁদতে কাঁদতেই বলছিলেন, 'ছোট থেকে নিজের দুধ খাইয়ে মানুষ করেছি আমি। আমাদের মাটির ঘর। ভেঙে পড়ছে। নাতি বললো, হাতে টাকা নেই রাজমিস্ত্রি র কাজটা কিছুদিন করি। অর্থের সংস্থান হলে ঘরটা বানাবো। রোজ রাত ১১ টার সময় ফোন করে জিজ্ঞাসা করতাম ঠিকমতো খেলো কিনা। গত পরশু দিন ফোন বেজেই গেল কেউ ধরলো না। উদ্বিগ্ন ছিলাম, এরকম তো কোনদিন হয়না! গতকাল তারপর সেই ভয়ানক খবরটি পেলাম। এখন মনে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজটাই ভালো ছিল।'
প্রতিবেশী দের গলাতেও বিষাদের সুর। খুবই হাসিখুশি স্বভাবের ছেলেটির এই মর্মান্তিক মৃত্যু মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না কেউই। শেখ আজিম বলেন, 'যা হয়েছে অনিচ্ছা থাকলেও আমাদের তা মেনে নিতে হবে। শুধু প্রশাসন কে অনুরোধ করবো তাঁরা যেন পাশে থাকে।'