Garden Reach Building Collapse: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত। বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯। এবার সেই নির্মাণের প্রোমোটারের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। তবে তাতেও বিতর্ক থামছে না। এবার নয়া বিতর্ক, ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমের সঙ্গে ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শামস ইকবালের ঘনিষ্ঠতা।
২ বারের কাউন্সিলর শামস ইকবালের ওয়ার্ডেই রবিবার মধ্যরাতে বিভীষিকায় বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে ৯ জনের। তাঁর ওয়ার্ডেই এমন বেআইনি নির্মাণ সম্পর্কে তিনি নাকি জানতেনই না। এমনটা দাবি করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এর মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে, শামস ইকবালের সঙ্গে ধৃত প্রোমোটারের ছবি। ছবিতে শামস ইকবাল এবং মহম্মদ ওয়াসিমকে একটি অনুষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে।
স্থানীয় ও অন্যান্য সূত্রে দাবি, অভিযুক্ত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম ভেঙে পড়া বহুতলটি যে ওয়ার্ডের সেই ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শামস ইকবালের ঘনিষ্ঠ। যদিও এনিয়ে শামস ইকবালের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। এর আগে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে বিতর্কে জড়িয়েছেন শামস ইকবাল। পুরসভায় একবার কোটি টাকা মূল্যের অ্যাস্টন মার্টিন গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন ইকবাল। সম্প্রতি আরও একটি গাড়ি কিনেছেন তিনি। যার বাজারমূল্য ৫ কোটি টাকা। সেই নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর প্রশ্ন, একজন সাধারণ কাউন্সিলরের কীভাবে রোজগার হতে পারে?
গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। বেআইনি নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রোমোটারের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে কলকাতা পুলিশ। মহম্মদ ওয়াসিম নামে ওই প্রোমোটারকে সোমবারই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেরায় তিনি স্বীকার করেছেন, পাঁচতলার উপরে গাঁথনি করতে গিয়েই দুর্ঘটনা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বহুতলটি ৫ তলা ছিল। ধৃত জেরায় জানিয়েছে, উপরের ফ্লোরে দেওয়াল তোলা হচ্ছিল। তার ফলে বিপর্যয় ঘটে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১২ জন। রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজের সময় আরও কয়েকজন আটকে রয়েছেন বলে খবর। রাতে আলোর অভাবে উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে বেশ কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন বলে খবর।
গার্ডেনরিচ কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্মাণটি যে বেআইনি ছিল তা স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং মেয়র। পুকুর বুজিয়ে ৪ ফুটের রাস্তায় কীভাবে বহুতল নির্মাণ হচ্ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন-পুরসভার নাকের ডগায় এই বেআইনি কাজ কীভাবে তারও কোনও উত্তর নেই।
গোটা ঘটনার দায় বাম আমলের উপর চাপিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিরোধীদের দাবি, কাউন্সিলর শামস ইকবালকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন মেয়র। যা নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, "যদি আপনারা তদন্ত করে দেখবেন, ১৪ বছর ধরে টানা ওখানে কাউন্সিলর বা বিধায়ক ওই বাড়ির মালিকের থেকে কাটমানি নিয়েছেন। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তদন্ত হলেই সত্য প্রকাশিত হবে।"